শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে তীব্র ভাঙন, হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে তীব্র ভাঙন, হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর কয়েকটি স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ও ধনাগোদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের (৬৪ কিলোমিটার) আওতায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া মেঘনার নদীর পশ্চিম পাশের ৫ কিলোমিটার জায়গা নদীভাঙনের শিকার হয়েছে।

এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি একসময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলের মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর পার ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। মেঘনা নদীর জহিরাবাদ লঞ্চঘাট থেকে সোনারপাড়া-সানকিভাঙ্গা, চরমাছুয়া-জনতার বাজার এবং ধনাগোদা নদীর ষাটনল থেকে কালীপুর, নবীপুর-হাফানিয়া-খাগুরিয়া, ঠেটালিয়া-সিপাইকান্দি পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার ভাঙনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনা নদীর পশ্চিম পারের চরাঞ্চল এলাকার বোরচর, চরউমেদ, নাছিরারচরে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। 

এ ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, কয়েক হাজার একর ফসলি জমি, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, বসতবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

এতে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। নদীভাঙন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা না নিলে শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, ১৯৮৬-৮৭ সালে সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত দু’বার বাঁধটি ভেঙেছে। তখন কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় অঞ্চলের মানুষের। পরে নতুন করে মেরামত করা হয় বেড়িবাঁধটি। 

স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাঙনকবলিত অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত অবৈধভাবে বালি উত্তোলন হয়েছিল। যার প্রভাবে এখন নদীর এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছ।

কালিপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘এ এলাকায় নদীর আচমকা ভাঙনের ফলে বাজারের ব্যবসায়ী, স্থানীয় বসতি, কালিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ফয়েহ আহম্মেদ মেমোরিয়াল হাসপাতাল নিয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন।’

সোনারপাড়া এলাকার মো. মনির হোসেন খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন মেঘনা নদীর জহিরাবাদ লঞ্চঘাট থেকে উত্তরদিকে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আবার  ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখানে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।’ 

ভাঙনকবলিত সিপাইকান্দি এলাকার ইউপি সদস্য একেএম গোলাম নবী খোকন জানান, ‘সিপাইকান্দি ঠেটালিয়া অঞ্চলে ধনাগোদা নদীর দেড় কিলোমিটার ভাঙন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে ব্লক নির্মাণ, জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা শুরু করেছে।’

 

ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলম সরকার বলেন, ‘ধনাগোদা নদীতে অবৈধ বালি উত্তোলনের কারণে ষাটনল ইউনিয়নের ষাটনল, কালিপুরসহ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।’

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মঞ্জুর আমীন স্বপন বলেন, ‘ধনাগোদা নদীর ভাঙনে খাগুরিয়া, হাপানিয়া ও নবীপুর এলাকার অনেক পরিবার এরই মধ্যে জমি হারিয়ে পথে বসেছে। আমরা আতঙ্কে আছি। মেঘনা-ধনাগাদা নদীর বেড়িবাঁধটিও ঝুঁকিতে রয়েছে।’

মেঘনা-ধনাগোদা পানি ব্যবহারকারী ফেডারেশনের সভাপতি রাসেল ফয়েজ আহমেদ চৌধুরী শহীন বলেন, ‘মেঘনা ও ধনাগোদা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সেচ প্রকল্প হুমকির মুখে।’

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর মো. সেলিম শাহেদ বলেন, ‘নদী ভাঙনকবলিত এলাকা আমরা পরিদর্শন করেছি। কয়েকটি অঞ্চলে ভাঙন দেখা দিলে তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে নদীর তীর ও সেচ প্রকল্প বাঁধ রক্ষায় ধনাগোদা নদীতে অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধে লিখিত অভিযোগ জানাব।’

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘নদীভাঙনের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।’

Link copied!