ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

সেতুর টোল প্লাজায় যুবদলের হামলা, ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
লালমনিরহাটে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা করা হয়। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধর করে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় টোল প্লাজার পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর পুলিশ স্থান পরিদর্শন করেছে। মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ। 

বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা করেন তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য মো. নাজমুল আলম। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, টোল না দেওয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে স্থানীয় যুবদল নেতা মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু (৪০) প্রায় ৪০ জনের একটি দল নিয়ে এ হামলা চালান।

মামলার প্রধান আসামি মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকার আবদুস সামাদ ব্যাপারীর ছেলে। তিনি গোকুণ্ডা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

মামলার এজাহারে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল ৩টায় যুবদল নেতা মাহফুজার রহমান (৪০), ফজলুর রহমান (৩৫) ও আবদুর রহিম (৪২) মোটরসাইকেলযোগে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়নে তিস্তা সড়ক সেতু পার হচ্ছিলেন।

তারা টোল প্লাজায় এসে টোল না দিয়ে মোটরসাইকেল দ্রুত চালিয়ে যেতে থাকলে থামানোর জন্য সংকেত দেন টোল প্লাজার কর্মীরা। 

তারা টোল দেবেন না, এমনকি তাদের আরও যত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলোও টোল দেবে না বলে তারা হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে টোল প্লাজার কর্মীদের কথা-কাটাকাটি হয়।

ওই ঘটনার পর রাত ৮টার দিকে মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের একটি দল দা, ছোরা, রড ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেল ও অটোযোগে টোল প্লাজায় হামলা করেন। 

হামলাকারীরা কর্মচারীদের মারধর করে। এ সময় টোল প্লাজার কর্মচারী মো. জুয়েল ইসলামকে (৩৭) মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টোল প্লাজার ক্যাশ বাক্স থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রধান আসামি মাহফুজার ছিনিয়ে নেন।

এ সময় টোল প্লাজার কর্মীরা প্রাণভয়ে দৌড়ে পাশে থাকা আরেক ক্যাশঘরে প্রবেশ করেন। তখন সেখানেও হামলা চালানো হয়। এতে টোল প্লাজার ম্যানেজার সুরুজ্জামান (৪০) গুরুতর আহত হন।

সুরুজ্জামানের ক্যাশ বাক্স থেকে মিঠু (৩৮) ও আবদুর রহিম (৪২) নামের দুজন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুরুজ্জামান (৪০) ও জুয়েল ইসলাম (৩৭) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এ ছাড়া টোল প্লাজার আরও দুই কর্মী মোসলেম উদ্দিন (৪০) ও আক্কাস আলী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আহত আরেক কর্মী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মামলার বাদী নাজমুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যারা হামলা, মারধর ও ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই করেছেন, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক না কেন, তাদের মূল পরিচয় এখন অপরাধী ও সন্ত্রাসী। তারা টোল প্লাজার কর্মীদের বিনা দোষে, বিনা উসকানিতে মারধর করে গুরুতর আহত করেছেন। ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ১৪ লাখ টাকা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।’

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, ‘তিস্তা সেতুর টোল প্লাজায় হামলার সংবাদ পেয়ে বুধবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তার ও ছিনিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’