ঢাকা শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকটে বিপাকে কৃষক

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক ও শ্রমিক। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চুয়াডাঙ্গা জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন তারা। 

এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম এবং ধানে তেমন কোনো রোগবালাই না লাগায় ফলন আশানুরূপ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে  পুরোপুরি  ধান কাটার কাজ শেষ হবে বলে মনে করছেন তারা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা এবং জীবননগর উপজেলার বেশকিছু এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সবুজ ধান পেকে সোনালি রং ধারণ করেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ। 

আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে ধান কাটা। এরপর ২-৩ দিন রোদে শুকিয়ে ধানের আঁটি বেঁধে বাড়িতে আনা হবে। জেলার কৃষকেরা পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও বছরে দুবার ধান চাষ করে থাকেন। ধানের পাশাপাশি এর বিচালি উৎকৃষ্ট মানের গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রাপ্ত বিচালির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা।

সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের ধান চাষি  শুকুর আলী  বলেন, আমি এবার ৪ বিঘা জমিতে খাটো বাবু ,মিনিকেট জাতের ধান চাষ করেছি। ধান খুব ভালো হয়েছে। আগামী ২-৩ দিন পর ধান কাটা শুরু করব। প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মণ করে ধান পাব বলে আশা করছি। 

জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাশপুর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান  বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে রড মিনি জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন এবার খুব ভালো হবে বলে আশা করছি। মাঠের ধান দেখে খুব আশাবাদী। তবে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় আছি। ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না। ধান বিক্রি করে মহাজনের হালখাতা ও বর্গা জমির টাকা শোধ করব।

দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি  গ্রামের কৃষক সালেকিন মিয়া  বলেন, ধান চাষ এখন অনেক ব্যয়বহুল। তবে এবার ফলন দেখে মনে হচ্ছে ধান লাগানো, সেচ, সার-কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে। তবে ধান কাটব কিন্তু কোনো শ্রমিক পাচ্ছি না। আকাশের যে অবস্থা- কখন যে ঝড়, বৃষ্টি হবে সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলমগীর হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে ৬ হাজার ১৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব তেমন ছিল না এবং ধানে রোগবালাইও তুলনামূলকভাবে কম ছিল। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাসের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় বোরো ধানের অনেক সুন্দর ফলন হয়েছে।