ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-নির্যাতন ও আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ৪টি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ভূমিদস্যু টিটু সরকার ও তার বড় ভাই শামীম সরকার। কিন্তু তাদের গ্রেপ্তারে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
টিটু বর্তমানে বুড়িমারী বর্ডার এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। আর শামীম সাভার ডিওএইচএস পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার রোড নং-৯, হাউজ নং-১৬৭, ৪র্থ তলায় অবস্থান করছেন। তারা অনেকটা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও নিহতের পরিবার।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, আশুলিয়ার কাঠগড়ার দূর্গাপুর এলাকায় হত্যা মামলায় বাকি আসামিরা পলাতক থাকলেও টিটু ও শামীম প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। টিটু শ্বশুরবাড়ি অবস্থান করলেও মাঝেমধ্যেই আশুলিয়ায় আসেন। ঘুরে বেড়ান প্রকাশ্যেই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
এরই মধ্যে হত্যা মামলার মূল কাগজপত্র ও তাদের অবৈধ কাজের যাবতীয় প্রমাণাদি এ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।
অভিযুক্ত টিটু সরকার আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও তার বড় ভাই শামীম সরকার আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২নম্বর ওয়ার্ডের সক্রিয় সদস্য। তারা দু’জন আশুলিয়ার কাঠগড়া দূর্গাপুর এলাকার হারেজ সরকারের ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, টিটু বর্তমানে বুড়িমারী বর্ডার এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে ও শামীম সাভার ডিওএইচএস পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার রোড নং-৯, হাউজ নং-১৬৭, ৪র্থ তলায় অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, আদালতে জাল দলিলের মামলা চলমান ও একাধিক ব্যক্তির জমি দখল করে রেখেছে। টিটু সরকারের নামে মোট ৮টি জমি সংক্রান্ত ও ৪টি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও শামীম সরকারের নামে হত্যা মামলা রয়েছে ৩টি।
স্থানীয়রা জানান, টিটু ও শামীম আওয়ামী লীগ করতেন। তখন তারা জোরপূর্বক মানুষজনের জায়গা-জমি দখল করতেন। একপর্যায়ে তাদের ওপর এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বাধা-নির্যাতন ও হত্যা মামলার আসামি তারা। অথচ, তাদের মামলা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা বোধগম্য নয়। এখনো জোরপূর্বক মানুষের জায়গা-জমি দখলের চেষ্টায় রত তারা। এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিনুর কবির বলেন, ‘তারা যদি এরকম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের সত্যতা যাচাই করে গ্রেপ্তার করা হবে। এরই মধ্যে এসব মামলায় একাধিক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে এসব মামলায় প্রতিদিন গ্রেপ্তার চলমান বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :