মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাদ্রাসা ভবনের তিনটি শ্রেণিকক্ষ, অফিসরুম, পাঁচটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ গাড়ির গ্যারেজ পুড়ে গেছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভোর চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন ও দমকল বাহিনীর দীর্ঘ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরের দিকে স্থানীয় লোকজন আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ভবনে আগুন জ্বলতে দেখেন। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মাদ্রাসায় কেউ ছিলেন না। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে স্থানীয় লোকজন নেভাতে ছুটে আসেন।
তারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে খবর দেন। সকাল সোয়া পাঁচটায় দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, এর আগেই মাদ্রাসার ভবনটি আগুনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
আদর্শ শিক্ষক সমিতির উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মোহাইমীন বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে-সঙ্গেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে, ২০২২ সালে একইভাবে এ মাদ্রাসার বাণিজ্যিক মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬টি দোকান পুড়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। তিন বছরের মধ্যে একই কায়দায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।’
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. ময়নুল হক বলেন, ‘বন্ধ থাকায় কেউ মাদ্রাসায় ছিলেন না। মাদ্রাসার আয়ের জন্য ভবনের পাশে একটি গ্যারেজ নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। গ্যারেজে থাকা পাঁচটি সিএনজি, আসবাবপত্রসহ তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও অফিসকক্ষ সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।’
তবে, আগুন লাগার কারণ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে রাত তিনটার দিকে আগুনের সূত্রপাত। ভোর সোয়া চারটার দিকে তিনিসহ স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসায় ভয়াবহ আগুন দেখে তা নেভাতে এগিয়ে যান।’
‘খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে নাকি দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে মাদ্রাসায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, প্রশাসনের তা তদন্ত করে দেখা জরুরি।’
বড়লেখা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শামীম মোল্লা শনিবার বিকেলে বলেন, ‘ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছি। আগুনে মাদ্রাসার কয়েকটি কক্ষ ও বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি সিএনজি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা জানা যায়নি।’
বড়লেখা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (কম) আশরাফ হায়দার বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে নয়, দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগে বর্ণী আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটেছে।’