কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে পদ্ম বিলে সৌন্দর্যপ্রেমীদের ভীড় লেগেই আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসূদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের দড়িজাহাঙ্গীরপুর গ্রামের কাইনকা বিল। পদ্মকে বলা হয় জলজ ফুলের রানী। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া ফুলের রানী পদ্ম সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কাইনকা বিলে। পদ্মফুলের নজরকাড়া সৌন্দর্যের বদৌলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিলের সুখ্যাতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। দুর থেকে মনে হবে যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ। প্রতিদিনই এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে দর্শনার্থীরা। স্থানীয় মানুষদের কাছে বিলটি কাইনকা বিল নামে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পদ্মফুল চোখে পড়লেও তাড়াইলের পদ্মবিলে ফুটে থাকা পদ্মফুলের দৃশ্য বড়ই মনোরম।
সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের দড়িজাহাঙ্গীরপুর জয় বাংলা বাজারের দক্ষিণ দিকে রয়েছে কাইনকা বিলটি। উপজেলার ঘোষপাড়া, দেওথান ও করিমগঞ্জ উপজেলার করণশি গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত কাইনকা বিলটি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এই বিলে দেখা যায় পদ্ম ফুলের বিশাল সমাহার৷ বিল জুড়ে ফুটন্ত পদ্মফুল গুলো সৌন্দর্যের পূর্ণতা নিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাক ভ্রমন পিয়াসীদের৷ বিকেলে পদ্ম ফুলের দৃশ্যটি এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি করে৷ অসংখ্য পদ্মফুল ঝলমল করে উঠে সারা বিল জুড়ে ৷ দূূর থেকে দেখে মনে হয় যেন সাজানো-গোছানো এক ফুলের বাগান৷

পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা কিশোরগঞ্জ সদরের তাহের, সৃষ্টি মনি, কানিজ সুলতানাসহ আরও অনেকেই বলেন, কাইনকা বিলের পদ্মফুল এবং পদ্মপাতা গুলো মানুষের মন জুড়ে প্রভাব বিস্তার করছে ৷ বিলের বর্তমান দৃশ্যটি মানুষের মনে দাগ কাটছে। এই বিলের পদ্মফুল ও তার পাতাগুলো স্পর্শ করলে মনে হয় যেন সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে প্রবেশ করেছি। বিলের পদ্মফুলগুলো আশপাশের পরিবেশটাকে আকর্ষণীর্ষ করে তুলেছে। সাদা-লাল রঙের পদ্ম ফুলের মাঝে সবুজ রঙের পদ্ম পাতাগুলো যেন পরিবেশটাকে শীতল করে তুলেছে ৷ নৌকা দিয়ে বিলের মাঝে প্রবেশ করার পর মনে হবে যেন কোনো এক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে অবস্থান করছি ৷
বিলের আশপাশ এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই বিলটিতে বর্ষাকালে অসংখ্য পদ্মফুল ফোটে৷ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেক লোকের জনসমাগম হয় এই বিলে পদ্মফুল দেখার জন্য৷ নৌকা দিয়ে বিলটি ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। পদ্মবিলের সৌন্দর্য একনজর উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসছেন। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সৌন্দর্যপিপাসুরা বিলটিতে ভিড় করছেন। অনেক দর্শনার্থী মনের আনন্দে কিংবা ছবি তোলার জন্য ফুল ছিঁড়ছেন। অনেকে আবার ফুল ছিঁড়ে বাসায় নিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দিচ্ছেন। এতে বিলটিতে পদ্মফুলের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে এবং বিলের সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে। সাধারণত পুরোনো গাছের কন্দ ও বীজের সাহায্যে পদ্মের বংশবিস্তার হয়ে থাকে। এভাবে যদি গণহারে ফুল ছেঁড়া অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী বছর পদ্মের বংশবিস্তার মারাত্মকভাবে কমে যাবে এবং বিলটির অপরূপ সৌন্দর্য হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় বিলটি সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

কিশোরগঞ্জ সদর থেকে নীলগঞ্জ বাজার ভায়া সিএনজি বা অটো যোগে সরাসরি দড়িজাহাঙ্গীরপুর কাইনকা বিলে আসা যাবে৷ তাড়াইল উপজেলা সদর থেকেও যে কোনো যানবাহন দিয়ে আসা যাবে।
তবে ভ্রমনপিপাসুরা অভিযোগ করেন, ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকাগুলো দর্শনার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।কয়েকজন মাঝি নৌকা নিয়ে বসে থাকায় তাদের ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছেন।এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর জরুরী।
আপনার মতামত লিখুন :