মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মামলার বাদী কলেজ ছাত্রী রিয়া আক্তারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এএসআই জাহাঙ্গীর আলম। পরে বিভিন্ন কৌশলে ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন তিনি। শারিরীক সম্পর্কে রুপ দিতে কাজী অফিসে নিয়ে বিয়েও করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। সম্প্রতি এক থানা থেকে অন্য থানায় বদলি হয়ে যাওয়ার পরই ওই কলেজ ছাত্রীকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেন জাহাঙ্গীর। চলতি বছরে ৬ জুন ১৫ লাখ টাকার দেনমোহরে ঢাকার রায় সাহেব বাজারের কাজী মাওলানা মো. সাদেক উল্যাহ ভুইয়া তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করেন।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের রাজাখানের মেয়ে ও করটিয়া সাদত কলেজের শিক্ষার্থী রিয়া আক্তারকে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন তৎকালীন নাগরপুর থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই- বিপি নং-৮৩০/৩০৯১৭৬২) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বলদিঘাট এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নাগরপুর থানা হতে বদলী হয়ে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় কর্মরত রয়েছেন।
ওই কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে প্রতারণা ও তথ্য লুকিয়ে বিয়ে করার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার, ফরিদপুর পুলিশ সুপার ও নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি ওই শিক্ষার্থী। পরে টাঙ্গাইল আদালতে যৌতুক ও নির্যাতন আইনে পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। এছাড়া ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর আলাদা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।
লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী জানায়, দেলদুয়ার থানায় একটি মামলার তদন্ত করতে দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইলে আমাদের বাড়িতে আসে এএসআই জাহাঙ্গীর আলম। ওই সময় তার সাথে পরিচয় ঘটে। পরে বিভিন্ন কৌশলে আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে ঢাকায় একটি কাজী অফিসে নিয়ে বিয়ে করে। এরপর থেকেই আমরা দুইজনে একসাথে বসবাস করেছি। পরবর্তিতে নাগরপুর থানা হতে ফরিদপুরে বদলী হওয়ার পর থেকে কোন যোগাযোগ করছে না এবং তাদের বাড়িতেও আমাকে নিচ্ছে না। পরে জানতে পারি তার স্ত্রী ও দুইজন সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তাকে তালাক দেয়ার জন্য মোবাইলে বারবার প্রাণনাশ ও মামলার ভয় দেখাচ্ছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়া আক্তার জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং তথ্য গোপন করে বিয়ে করেছে জাহাঙ্গীর। বিয়ের পর একসাথেই ছিলাম কয়েক মাস। ৫ই আগষ্টের পর অন্যত্র বদলি হওয়ার পরই তার আরেক বিয়ে হওয়ার তথ্য পাই। বদলি হওয়ার পর থেকেই আমার কোন খোঁজখবর নেয় না। তার স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও প্রতারণা করে আমার জীবন নষ্ট করেছে। আমি তার সাথে সংসার ও স্ত্রীর মর্যাদা চাই। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। আদালতেও মামলা দায়ের করেছি। এখন তাকে তালাক দিতে বারবার হুমকি দিচ্ছে। ফলে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
নগরকান্দা থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও রিয়া আক্তারে স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাজী অফিসে বিয়ে করেছি ঠিক আছে। আইনীভাবে বিষয়টির সমাধান করা হবে।
ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, রিয়া নামের ওই নারী থানায় এসেছিলেন। জাহাঙ্গীর তাকে নিয়ে সংসার করবে না বলে জানিয়েছেন। তবে ওই নারী কোন অভিযোগ দেয়নি। টাঙ্গাইলে মামলা হওয়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই।
নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম জসীম উদ্দিন বলেন, এএসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাকে নাগরপুর থেকে বদলির করা হয়েছে। বদলি হওয়ার পরই জানতে পারি সে রিয়া নামের একজন বিয়ে করেছেন। যেহেতু নাগরপুর থানায় তিনি কর্মরত নেই সুতরাং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব না
আপনার মতামত লিখুন :