ঢাকা শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪
ছাতা মেরামত করে চলে সংসার

হেমন্তকালেও ব্যস্ততা বেড়েছে আগৈলঝাড়ার ছাতার কারিগরদের

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম

হেমন্তকালেও ব্যস্ততা বেড়েছে আগৈলঝাড়ার ছাতার কারিগরদের

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এই ছয়টি ঋতুর প্রত্যেকটির আছে একেকটি আলাদা রূপ। এদের মধ্যে আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দু’মাস বর্ষাকাল। প্রকৃতিতে এখন চলছে হেমন্তকাল। তবুও প্রায় প্রতিদিনই নামছে থেমে থেমে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে থাকছে রোদ।

তবে এই রোদ-বৃষ্টির অন্যতম অনুষঙ্গ হলো ছাতা। যাদের ছাতা নষ্ট হয়ে গেছে তারা ছুটছেন ছাতার কারিগরের কাছে। যাদের ছাতা নেই তারা নতুন ছাতা কিনছেন। ফলে হেমন্তকালেও বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চেংগুটিয়া গ্রামে ছাতা তৈরি-মেরামত কারিগর জলিল মুন্সির কাজ কিন্তু বন্ধ নেই।

এদিকে হেমন্তকালেও ছাতার বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। ঘরে সংরক্ষণ করে রাখা পুরাতন ছাতা ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে দোকানগুলোতেও ছাতা বিক্রি বেড়েছে। ফলে সকাল থেকে বিকেল অবধি কারিগর জলিল মুন্সি করছেন ছাতা মেরামতের কাজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চেংগুটিয়া বাজারে রাস্তার পাশে বসে ছাতা মেরামতের কাজ করছেন। এছাড়াও তিনি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ছাতা মেরামত করছেন জলিল মুন্সি।

জলিল মুন্সি নিম্ন আয়ের মানুষ হওয়ায় এ কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়াও গৌরনদী-আগৈলঝাড়া উপজেলা শহর থেকে পাড়া-মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি ছাতা। শিশুদের জন্য আছে বাহারি নকশার ছাতাও। সেই সঙ্গে কারিগররা ছাতা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ছাতা কারিগর মো. জলিল মুন্সি জানান, ৩০ বছর ধরে তিনি বাজারে ছাতা মেরামত ও তালা-চাবি ঠিক করার কাজ করছেন। দৈনিক এ কাজ করে ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় করা যায়।

তিনি বলেন, এখন হেমন্তকাল। তবুও প্রায় প্রতিদিন বৃষ্ট হওয়ায় ছাতা মেরামত করার কাজের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওইসব কাজ করেই চলছে তার সংসার।

আরেক ছাতার কারিগর আবুল মান্নান জানান, আসলে সব সময় খুব একটা কাজ থাকে না। ছাতা মেরামতের পাশাপাশি তালা-চাবি ও লাইট মেরামতের কাজ করে থাকি। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় কাজের চাপ বেড়ে যায়। তবে ছাতার প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। ফলে ছাতার কাপড়, হাতল, স্প্রিং, কামান প্রভৃতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। তবে সেই অনুযায়ী তাদের মজুরি তেমন বাড়েনি।

সৈয়দ তালুকদার বলেন, কার্তিক মাসেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া রোদও থাকছে ভালো। ঘরে দুটি ছাতা বেশ কিছুদিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। রোদ ও বৃষ্টির সময় ছাতার দরকার হয়, এজন্য মেরামত করতে আনা হয়েছে। এই দুটি ছাতা মেরামত করতে কারিগরকে ৮০ টাকা দিতে হয়েছে । নতুন একটি ছাতা কিনতে গেলে কম করে হলেও ৫০০-৬০০ টাকা লেগে যেতো।

ছাতা কিনতে আসা মো. আরমান হোসেন বলেন, আমি চাকরি করি। আমার মেয়ে কলেজে ও ছেলে স্কুলে পড়ছেন। কার্তিক মাসেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাই ছাতা কিনতে এসেছি। দুটি ছাতা ১১শ টাকায় কিনেছি।

চেংগুটিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. মাছুম মিয়া বলেন, তার দোকানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ছাতা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ভাঁজহীন দেশি ছাতা ৫০০-৬০০ টাকা, দেশি-বিদেশি দুই ভাঁজের ছাতা ২৫০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরবি/ এইচএম

Link copied!