চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে এলার্জি রোগীর সংখ্যা। একজন দিয়ে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে পুরো পরিবার আক্রান্ত হচ্ছে একই রোগে। এদিকে করোনা টিকা নেওয়ার ফলে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এ বিষয়ে সুনিদিষ্ট কোন তথ্য নেই ডাক্তারদের কাছে। স্ক্যাবিস ও ফাঙ্গাস দুই ধরণের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, স্ক্যাবিস হলে সারা শরীর চুলকাতে থাকে। আঙুলের ফাঁকে, নিতম্বে, যৌনাঙ্গে, হাতের তালুতে, কব্জি, বগল, নাভি ও কনুইয়ে চুলকানি শুরু হয়। পরে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। রাতে চুলকানি বেশি হয়ে থাকে। ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে, যা খুব চুলকায় এবং তা থেকে পানির মতো তরল পদার্থ বের হতে পারে। একই বিচানায় থাকার ফলে পরিবারের সবাই আক্রান্ত হয়। ফাঙ্গাস সাধারণত হাইজিন থেকে হয়ে থাকে। বিশেষ করে গরমকালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ঘাটতি হলে এ রোগ বেশি হয়। দুই সপ্তাহের নিয়মিত চিকিৎসায় এ রোগ নিরাময়যোগ্য।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে চিকিসা নিতে আসা আতাউর রহমান কায়সার জানান, প্রথমে চুলকানি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর নিকটস্থ ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে খান পরে আরো বেড়ে যাওয়ায় চমেক হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রথমে নিজে আক্রান্ত হলেও এখন পরিবারের সবাই আক্রান্ত বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বহিবিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান বলেন, চট্টগ্রামে স্ক্যাবিস ও ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ছোঁয়াচে রোগ হওয়ার কারনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সবাই করোনা টিকা নেওয়ার ফলে এলার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার কথা বললেও আমাদের কাছে এটার সুনিদিষ্ট তথ্য নেই। আর এটা রিসার্চের বিষয়। রিসার্চ ছাড়া তো বলা যাবে না। এলার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে ইকোনোমিক কন্ডিশনটাও জড়িত। পরিস্কার পরিচন্নতা ও হাইজিন মেনটেইন করার মাধ্যমে বিস্তার কিছুটা রোধ করা যায়।
তবে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনার টিকা নেওয়ার ফলে এলার্জি আক্রান্ত হচ্ছে এরমক কোন তথ্য নেই এবং এটা সত্যও না। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এলার্জি কমে বাড়ে। এ বছরের মাঝখানে একটু বেশি গরম পড়ছিল এটার কারনে কিছুটা বাড়ছে। এটা করোনার সাথে সম্পর্কিত না । তবে সারা বছরের তুলনায় জুন, জুলাই , আগস্ট, সেপ্টেম্বরের দিকে আক্রান্তের সংখ্যা একটু বেশি থাকে।আবার শীতকালে কিছুটা কমে যায়। তবে এসব বিষয় নিয়ে মেডিকেল কলেজ গুলোতে সবসময় রিসার্চ চলমান থাকে। নতুন কোন তথ্য পেলে সেটা আমরা সবাইকে জানিয়ে দিই।
তিনি আরো বলেন, স্ক্যাবিসটা মূলত ক্লোজ কন্টাক্টের কারনে হয়ে থাকে। বিশেষ করে একই বিচানায় থাকার ফলে পরিবারের সবাই আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর আক্রান্ত হলেই চিকিৎকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক নিদিষ্ট ড্রোজের ওষুধ খেতে হবে। এছাড়া বিচানার চাদর, বালিশ, জামা-কাপড় যতটা সম্ভব রোদের মধ্যে শুকাতে হবে। এতেই কিছুটা কমে আসবে
আপনার মতামত লিখুন :