ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বান্দরবানে জেলা পরিষদ নিয়োগে ৬ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম

বান্দরবানে জেলা পরিষদ নিয়োগে ৬ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

স্থানীয় জনগণের মতামত ও পার্বত্য জেলা পরিষদের আইনকে প্রধান্য দিয়ে চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের ৬ দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বান্দরবানের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় শহরে প্রাণ কেন্দ্র মাস্টার গেস্টহাউজে কনফারেন্স কক্ষে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদের প্রতি এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। নিরবতা পালন শেষে  উকিংওয়াং মার্মা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। 

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের বিশেষ একটি অঞ্চল। এখানে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পার হবার পর ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি ১৯৯৭ পর এ অঞ্চলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার যাত্রা শুরু করে। স্থানীয় পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে বসবাসরত বাঙালি ভাই-বোনদের মাঝেও এক বিরাট স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলো১৯৯৭ স্বাক্ষরিত এ চুক্তি। চুক্তিতে পাহাড়ী বাঙালির সহাবস্থান নিশ্চিত করে বিশেষ বিশেষ ধারা সংযোজিত হওয়ায় পার্বত্য জেলা পরিষদ একটি স্বতন্ত্র এবং বিশেষ জেলা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।

বক্তব্যে বলেন, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া ও চুক্তি মোতাবেক জেলা পরিষদের নির্বাচন না হওয়ায় জনবান্ধন প্রতিনিধি নির্বাচন হতে বান্দরবানসহ অন্যান্য পার্বত্যবাসী বঞ্চিত হয়ে আসছে। বরং এতে দেখা যায়, জেলা পরিষদের সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সাথে আলোচনা না করে ফ্যাসীবাদী সরকারের মদদপুষ্ট ব্যক্তিদের আনা হয়েছিল জেলা পরিষদের আসনগুলোতে। ফলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন না হওয়া ও যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচনের অভাবে পার্বত্য জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় পার্বত্য বান্দরবানবাসীর মনে।

পরিশেষে তিনি বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬ বছর পরো কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি এবং এ অন্তর্বর্তীকালীন সময়েও পার্বত্য জেলা পরিষদে নির্বাচনের সুযোগ নেই, তবে আমরা দাবি করি, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এমন সদস্যদের বাছাই করা হোক যিনি নির্দলীয়, সৎ, দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক। তাই প্রধান উপদেষ্টা  ড. মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে স্বাগত জানান শিক্ষার্থীরা। 

সম্মেলন শেষে ৬দফা দাবি নামা উত্থাপিত করেন বৈষম্যেবিরোধী শিক্ষার্থীরা। 

সেগুলো হল- 

১.অতি শীঘ্রই বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বাধ্যতামূলক অব্যাহতি বা অপসারণ করতে হবে।

২. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে ভারসাম্য বজায় রেখে দুইজন সদস্য নিয়োগ করতে হবে।

৩. ইতিপূর্বে বান্দরবান জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান বা সদস্য ছিলেন কিংবা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কিংবা কোন রাজনৈতিক কোন অঙ্গ সংগঠন বা পেশাজীবী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন কাউকে জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান বা সদস্য নিযোগ দেওয়া যাবে না।

৪. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কিংবা সাম্প্রদায়িক উস্কানি দাতাদের বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান বা সদস্য নিয়োগ দেওয়া যাবে না। 

৫. বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান এবং সদস্য নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

৬. বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনের পর জেলা পরিষদের যে কোন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছাত্র প্রতিনিধির উপস্থিতিতেই নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মার্মা জনগোষ্ঠীর ছাত্র প্রতিনিধি উসিংম্যা মার্মা, উকিংওয়াং মার্মা ও অংশৈসিং মার্মা, খুমী জনগোষ্ঠীর নাংফ্রা খুমী, খেয়াং জনগোষ্ঠীর হিরো খেয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি বিজয়ান তঞ্চঙ্গ্যাসহ শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!