বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৬:৪০ পিএম

চোখে গুলিবিদ্ধ নিয়েই ১২ দিন জেলে ছিলেন আশরাফুল

পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৬:৪০ পিএম

চোখে গুলিবিদ্ধ নিয়েই ১২ দিন জেলে ছিলেন আশরাফুল

শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েও ১২ দিন জেল খাটতে হয়েছিল কলেজ শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলামকে। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পলাশ বাজার এলাকার দিন মজুর সাব্বির হোসেনের বড় ছেলে আশরাফুল ইসলাম। সে নরসিংদী সরকারি কলেজের এইচএসসির পরীক্ষার্থী।

সরেজমিনে আজ সোমবার সকালে কলেজ শিক্ষার্থী আশরাফুলের বাড়িতে গেলে সে জানায়, ১৮ জুলাই বিকালে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলের যোগ দেয় সে। মিছিল কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলি আসতে থাকে। এ সময় পুলিশের করা গুলিতে নরসিংদীর এনকেএম হাই স্কুল এন্ড হোমস বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শহীদ তাহমিদ ভুইয়া আমার পাশে গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আমি তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমার বাম চোখে পুলিশের ৪টি ছোড়াগুলি লাগে। মুহুর্তে আমিও মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা আমাকে উদ্বার করে নরসিংদী জেলা ১০০ শষ্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা আমার বাবাকে খবর দিলে আমার বাবা হাসপাতাল থেকে আমাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্বার করে সন্ধার পর বাড়িতে নিয়ে আসে। পরের দিন ১৯ জুলাই  সকালে অ্যাম্বোলেন্স করে ঢাকায় আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেদিনই আমার চোখ অপারেশন করে। এদিকে পরের দিন ২০ জুলাই আমাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি আসার কথা বললে আমার বাবা আমাকে ২১ জুলাই বাড়িতে নিয়ে আসে। শিক্ষার্থী আশরাফুল এ সময় আরও বলেন,পুলিশের গুলিতে চোখ অপারেশন করে আসার পরের দিনই ২২ জুলাই প্রায় ২০-২৫ জনের একদল পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমাকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়। একদিন থানায় রাখার পর ২৩ জুলাই পুলিশ আমাকে নরসিংদী মডেল থানায় হস্তান্তর করেন। পুলিশ আমার বিরুদ্ধে নরসিংদী জেল খানায় হামলা ও ভাংচুরের মামলা দিয়ে  আমাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। জেলে থাকা অবস্থায়ও আমাকে ভৈরব রেলওয়ে ফাড়িতে হামলার আরও একটি মামলা দেয় আমার নামে। পুলিশের কাছে আমার চোখের ঔষধ ও কাগজ পএ সাথে নিয়ে যাওয়ার আকুতি মিনতি করেও কোন লাভ হয়নি। শিক্ষার্থী আশরাফুল আরও জানায়, ১৯ জুলাই আমি জেলখানার হামলায় ছিলাম না, সে দিন ঢাকাতে চোখ অপারেশন করিয়েছি সে কথা বলার পরও পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।

১২ দিন জেল খাটার পর ৩ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষার্থী থাকায় ছাএ জনতার দাবীর মুখে আমাকে জামিন দেয় সরকার। জামিনে বাড়িতে আসার পর ৫ আগস্ট ছাএ জনতার কাছে সরকারের পতন হলে নিজেকে তখন মুক্ত মনে করি।

এদিকে বাম চোখের ভিতর গুলি থাকায় পুরোপুরিই বাম চোখটা দিয়ে কিছুই দেখতে পাই না। এমতাবস্থায় আমার বাবা ১৮ আগস্ট আমাকে পুনরায় ঢাকা ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করলে ডাক্তার ১৯ আগস্ট পুনরায় আমার চোখ অপারেশন করে এবং সরকারি নির্দেশনায় এ অপারেশন সম্পূর্ন ফ্রিতে করানো হয়েছে। অপারেশন করার পর ডাক্তার বলেছে চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে অপারেশর করার ফলে চোখ শুকিয়ে যাবে না।

শিক্ষাথী আশরাফুল ইসলাম দুই ভাই এক বোন। সে সবার বড়। ছোট ভাই আনিসুর রহমান পলাশ শিল্পা ল সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট বোন ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

ছোট ভাই আনিসুর রহমান জানান, আমার বাবা মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল আমরা দুই ভাই লম্বা হওয়াতে বড় হয়ে ভালো ভাবে লেখাপড়া শেষ করে পুলিশ অফিসার হবো। কিন্তু পুলিশের এমন জগন্য আচরণে আমার বাবা মার সে আশা নস্ট হয়ে গেছে। পুলিশের প্রতি তাদের এখন ঘৃনা জন্মেছে। আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আমিও ১৫ দিন পালিয়ে ছিলাম পুলিশের ভয়ে।

শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলামের বাবা সাব্বির হোসেন বলেন, আমার ছেলে গুলিবিদ্ব হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা তার পাশে থেকে আর্থিক সহযোগিতাসহ সকল ক্ষেএে এগিয়ে এসেছে। আমার ছেলেকে নিয়ে আমি গর্বিত। আমার ছেলের মতো অসংখ্য ছাএরা জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে দেশ নতুন করে স্বাধীন করেছে। গুলিবিদ্ধ ছেলের চোখের চিকিৎসা ব্যয় এবং সংসারের আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে গিয়ে খুব বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে আমাকে। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি সরকার যেন আমার ছেলের চিকিৎসার ব্যয় এবং সংসারের হাল ধরার স্বপ্ন পুরন করতে সহযোগিতা করেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!