ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত বরগুনার চাষিরা

তাপস মাহমুদ, বরগুনা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম

আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত বরগুনার চাষিরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আগামী রজানের বাজারে তরমুজ বিক্রির আশায় আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে চাষিরা। ভৌগোলিক কারণে তুলনামূলক বেশী উৎপাদন হয় উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। গত দেড় যুগ ধরে তরমুজ চাষ করে এ অঞ্চলের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসলের তালিকায় স্হান করে পেয়েছে তরমুজ। একারণে আমন ফসল ঘরে তুলতে না তুলতেই তরমুজ চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। একদিকে জমি চাষ অন্যদিকে বীজতলায় চাড়া উৎপাদন চলছে মাঠে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরগুনার আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে টিয়াখালী নদী পাড়ের চড়ে আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। জাপানী জাত বিগ ফ্যামিলী, বিগ ড্রাগন, ড্রাগন-টু জাতের তরমুজ চাড়া উৎপাদন করছে বীজ তলায়। জমি চাষাবাদে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ চলছে একরের পর একর জমির। 

চাষি শাহাবুদ্দিন বলেন, সামনের রমজানের বাজার ধরতেই তারা আগাম চাষাবাদে নেমে পড়েছে। প্রায় চুয়াল্লিশ একর জমিতে তরমুজ চাষ করবেন তিনি। এবছর চাষাবাদে অতিরিক্ত খরচ পড়লেও বাজার সময় মতন ধরতে পারলে অনেক লাভবান হতে পারবো। তবে সরকার যদি এগিয়ে আসে খরচ কমে যেত। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ওপর খরচ পড়বে চাষাবাদে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বিশ লক্ষ টাকা আয় করবেন বলে তিনি জানান।

চাষি দুলাল চৌকিদার বলেন ৬ একর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করছি। বিগ ফ্যামিলি (বাংলালিংক) জাতের তরমুজের চাষ করছি। জমি প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে এবং চাড়া দুই পাতা ছেড়েছে। তরমুজের রোগবালাই বা পরমর্শের প্রয়োজন হলে কোথায় যান জানতে চাইলে তিনি বলেন, কীটনাশক ও সার বিক্রেতার নিকট। সরকারি অফিসের লোকজনকে মাঠে পাওয়া যায়না বিধায় কীটনাশক বিক্রেতাদের নিকট গেলে তারা পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইছা ইকবাল বলেন, এবছর আমতলী উপজেলায় ৪৫৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করবেন কৃষকেরা। আমতলীতেই বেশী তরমুজ উৎপাদন হওয়ায় আগাম তরমুজ চাষে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছে কৃষক। আমাদের পক্ষ থেকে সকল রকমের পরামর্শ প্রদান করা হয় কৃষকের। তবে এই এলাকায় তরমুজ মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার লোকজন জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ করে। তারা আমাদের লোকজনকে অনেক সময় চিনতে অসুবিধা করে। তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় এনজিও ও ব্যাংক থেকে সুদে নিয়েও চাষাবাদ করে থাকে এঅঞ্চলের কৃষকেরা। এমনকি বাকীতে সার, ঔষধ, বীজ ও কীটনাশক মহাজনদের কাছ থেকে বাকীতে এনে ফসল বিক্রির পরে চড়া সুদ সমেত তা পরিষোধ করতে হয় কৃষকের। সরকারের সহযোগিতা ছাড়াই আগাম বাজার ধরতে নিজস্ব পদ্ধতিতে তরমুজ উৎপাদন করে আসছে জেলার কৃষকরা। তাদের দাবি সরকারের উচিত তরমুজ চাষে এ এলাকার চাষিদের সহযোগিতা ও প্রণোদনা করলে অনেক বেশি লাভবান হতো কৃষক। 

আরবি/জেডআর

Link copied!