বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. বাবুল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ১০:৪১ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবচেয়ে বড় ক্যালোগ্রাফি তুফান, দর্শনার্থীদের প্রশংসা

মো. বাবুল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ১০:৪১ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবচেয়ে বড় ক্যালোগ্রাফি তুফান, দর্শনার্থীদের প্রশংসা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ৫ আগস্টের পর থেকে দেয়ালে দেয়ালে ছিল বিভিন্ন সৃজনশীল লেখা, অঙ্ক ও ক্যালিগ্রাফিতে রঙিন করেছিল শিক্ষার্থীরা। নজর কেড়েছিল স্বাধীনতার সূর্যদয়ের একটি ক্যালোগ্রাফি। তেমনই একটি ক্যালিগ্রাফি নজর কড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর মনে। আর সেই ক্যালিগ্রাফির নাম হচ্ছে ‘তুফান ’। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও অন্যান্য জেলার বিভিন্ন ফেসবুজ পেজ ছাড়াও দর্শনার্থীরা নিজের ব্যক্তিগত আইডি থেকে প্রশংসামূলকভাবে ছবিটি প্রচার করে। 

গ্রাফিতিটি যারা এঁকেছেন:

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রাফিতিটি এঁকেছেন এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী উসাইদ মুহাম্মদ ও   জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদ্রাসায় তাকমীল ফিল হাদিস(মাস্টার্স) অধ্যয়নরত : মোহাম্মদ ওমর। উসাইদ মুহাম্মাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের পূর্বে ঢাকার লালবাগের একটি মাদরাসা থেকে তাকমিল ফিল হাদিস (মাস্টার্স) শেষ করেছেন। উসাইদ মুহাম্মদ পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মুহাম্মদপুরে বসবাস করেন। উসাইদের নিজ জেলা ফরিদপুর। বাবা হারুন অর রশীদ অটো মেকানিক্সের একটি ওয়ার্কশপ চালান। মা হালিমা বেগম গৃহিণী। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে উসাইদ মুহাম্মদ মেজো।

উসাইদ মুহাম্মদ জানান, আঁকাআঁকির শখ এসেছে তার বড় বোনকে দেখে। বড় বোন খুব ভালো ছবি আঁকতেন। সেই নিজে অনুশীলন করে এবং ২০১৬ সালে একটি একাডেমিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০১৮ সাল থেকে উসাইদ মুহম্মদ চিত্রাঙ্কন ও ক্যালিগ্রাফি করা নিজের পেশা হিসেবে নিয়েছেন। ২০২০ সালে ঢাকায় তিনি একটি একাডেমি শুরু করেন। একাডেমির নাম ‘বসিলা আর্ট ক্যালিগ্রাফি একাডেমি’। সেখানে তিনি বর্তমানে ৫০ জনকে চিত্রাঙ্কন বা ক্যালিগ্রাফি শেখান। শুধু তাই নয়, ২০২১ সাল থেকে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ক্যালিগ্রাফির ওপর কর্মশালা করেন উসাইদ।

মোহাম্মদ ওমর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসায় তাকমীল জামাতে অধ্যয়নরত মুহাম্মদ ওমর। মুহাম্মদ ওমর পরিবারের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে মুন্সেফপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।  বাবা ফরিদ উদ্দিন সরকার একজন পুলিশ কর্মকর্তা । মা ফিরোজা বেগম গৃহিণী। মা বাবা ও তিন বোনের পরিবারে ওমর একমাত্র ভাই । মুহাম্মদ উমর জানান ছোট বেলা থেকেই তার আকা আকির উপর প্রচুর শখ।  সেই  শখ থেকেই নিজে অনুশীলন করে এবং ২০১৯সালে একটি একাডেমিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে  মুহম্মদ ওমর চিত্রাঙ্কন ও ক্যালিগ্রাফি করা নিজের একটি পেশা হিসেবে নিয়েছেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি মানুষের অনুরোধে ব্যাক্তিগত ভাবে ক্যালিগ্রাফির কোর্স করানো শুরু করেন। বর্তমানে উনার ছাত্র শতাধিক আলহামদুলিল্লাহ। 

উসাইদ মুহাম্মাদ ও মোহাম্মদ ওমর এর চিন্তা ধারা:

উসাইদ মুহাম্মাদ : আমার ব্যক্তিগত চিন্তা হলো আমাদের ফিলিস্তিনি সিম্বলে অনেক অনেক কাজ করা উচিত। এই টার্গেট থেকেই  "তুফান" এর সৃষ্টি। কাজ নিয়ে তো অনেক কথা হবেই। তবে তুফান নিয়ে যদি একটু বলি।মুলত ফিলিস্তিনিরা "তুফান" নামটি প্রতীকী অর্থে ব্যবহার করে। এই শব্দটি আরবি ভাষায় "ঝড়" বা "ঝঞ্ঝা" বোঝায় এবং এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম, প্রতিরোধ এবং পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে এর ব্যবহার করে থাকে। এটি তাঁদের সংগ্রামের শক্তি, তীব্রতা এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখা হয়।

আমাদের আরো অনেক কাজ আসবে ফিলিস্তিন নিয়ে ইনশা আল্লাহ। তুফান নিয়ে আপনাদের উচ্ছাস আমাদেরকে সামনে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।জাঝাকুমুল্লাহ।

মোহাম্মদ ওমর: শিরোনামে গ্রাফিতির নাম দেওয়া হয়েছে "তুফান"।গ্রাফিতি শিল্পও বিপ্লব সংগ্রামের একটা মাধ্যম। এই দেয়ালটার ফ্রন্ট সাইটের ভিউ সেটাই আমাদের সর্বপ্রথম আকৃষ্ট করে এবং এই পুরোনো ধ্বংসপ্রায় মজবুদ ভবন দেখা মাত্রই আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের উপর ইজ্রাইলি সন্ত্রাসী দের হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহর গুলোর চিত্র ও তাদের আর্তনাদের কথা ব্যাথিত অন্তরে ভেসে উঠে। আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারছিনা,কিন্তু কিছু করা সকলের ঈমানী দায়িত্ব।  আমরা যেহেতু শিল্পী তাই আমাদের সাধ্যমতো যা করা যায় আমরা তা করার চেষ্টা সবময় করছি এবং করব। সেখান থেকেই এমন কিছু করার আইডিয়া আসে এবং এই ধরণের শীল্প মানুষের ই‍‍`লামি জায়গা থেকে অনেক ফায়দা দেয়। মানুষের চিন্তা করার ও জানার আগ্রহের  জায়গা বিস্তৃত করতে সহযোগিতা  করে। আমরা চাই মানুষ এগুলা দেখে আল আক্বসা কে আরো বেশি বুকে লালন করার প্রতি উদ্ভুদ্ধ হোক। ইজ্রাইলী আগ্রাসন ও নিপীড়নের ব্যাপারে আরো বেশি জানার আগ্রহ তৈরী হোক এবং হিউম্যান রাইটস নিয়ে মানুষ সচেতন হোক। ইজ্রাইলের চরম পর্যায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমাদের মজলুম ভাইদের জন্য যে যার যায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব ততটুকু করার জন্য অন্তরে দৃড় স্পৃহা লালন করুক।

অঙ্কনটি নিয়ে  দর্শনার্থীদের মতামত : শাহরিয়ার আহমেদ শুভ বলেন, ইসলামিক চিন্তাধারা ও ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য এই ক্যালোগ্রাফি টি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগাবে স্বাধীনতার এটি একটি চমৎকার দৃশ্য। ইতোমধ্যে ছবিটি নিয়ে সাধারণ মানুষ অনেক প্রশংসা করছেন। আর যিনি এই গ্রাফিতিটি এঁকেছেন তাকে নিয়েও মানুষ অনেক প্রশংসায় করছেন। পুরাতন একটি ভবনে এত সুন্দর চিত্র হতে পারে সেটি অনেকের জন্য শিক্ষণীয়। যিনি এঁকেছেন আর যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।

তরী বাংলাদেশের আহবায়ক শামীম আহমেদ বলেন, ছাত্র-জনতা গত ৫ ই আগষ্টের পর শহরের বিভিন্ন পুরাতন নতুন ময়লা হওয়া দেওলে সৌন্দর্যের ছোয়া লাগিয়েছে। এঁকেছে নানান ধরনের ক্যালোগ্রাফি। মুগ্ধতা ও ছড়াচ্ছে শহরের যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের মাঝে। এর আগেও  উসাইদ মুহাম্মদ ও তার সহপাঠীদের আঁকা ‘স্বাধীনতার সূর্যোদয়’ নাম যে অঙ্কনটি করেছেন তার প্রসংশা সারা দেশের মানুষ করেছে। এবারের পুরাত্ন পাওয়ার হাউজ রোডের এই অঙ্কনটি সত্যিই  প্রশংসার দাবিদার।

বিজয়নগর উপজেলা থেকে আসা একজন শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, চিত্রশিল্পীর অঙ্কনকৃত চিত্র তার মনের ভাব ও ধর্মের প্রতি সম্মান রংতুলি দিয়ে অঙ্কন করেছে। ‘ অঙ্কনটির চিত্রশিল্পী ও সকল ছাত্রসমাজের মনের ভাব। এই ইসলামের প্রতি তাদের সম্মানটুকু মুসলমানদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!