ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিলাইছড়ির বড়থলি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন আছে নেই পাঠদান কার্যক্রম

রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম

বিলাইছড়ির বড়থলি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন আছে নেই পাঠদান কার্যক্রম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার দুর্গম বিলাইছড়ির বড়থলি উচ্চ বিদ্যালয় আছে, শিক্ষার্থীর অভাবে নেই পাঠদান কার্যক্রম। তাই আবাসিক হোস্টেল নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। যেহেতু দুর্গম ও স্বল্পসংখক জনসংখ্যার একটি জনপথের নাম বড়থলি ইউনিয়ন। রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলাধীন অন্তর্গত এই বড়থলি ইউনিয়নটি। রাঙামাটি জেলঅ সদর ও বিলাইছড়ি সদর উপজেলা হতে বিচ্ছিন্ন একটি জনপদ বড়থলি ইউনিয়ন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নাম বড়থলি এই গ্রামটি। এই দুর্গম প্রান্তের কেউ খবরও রাখেনি। সবদিক থেকে অবহেলিত বড়থলি অজয় পাড়া।

বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ২বছর আগে একটি উচ্চ বিদ্যালয় টিন সেট ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। শিক্ষক ও নিয়োগ করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী আসছে না। বর্তমানে জংগলে পতিত হয়েছে বিদ্যালয়টি। স্থানীয়রা বলছে আবাসিক ব্যবস্থা থাকলে বিদ্যালয়টি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। কারন অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেটে আবার ঘরে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। তারা স্থানীয়রা তাদের ছেলে মেয়ের পড়ালেখার জন্য আবাসিক হোস্টেল ভবন নির্মাণের দাবি করেছে।

বড়থলি মৌজার চাজিং পাড়ার কার্ব্বারী উপায় মনি ত্রিপুরা বলেন, বড়থলি ইউনিয়নে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। মিশন এনজিও কর্তৃক পরিচালিত ৭টি বেসরকারি প্রাথমিক স্তরের বিদ্যালয় রয়েছে। নেই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অনুন্নত একটি এলাকা বড়থলি নামক এই ইউনিয়ন। নেই শিক্ষা ব্যবস্থা,নেই স্বাস্থ ব্যবস্থা, নেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। বড়থলিবাসী সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আয় উপার্জনের তেমন কিছুই নেই এখানে। গরীব অসহায় মানুষের সংখ্যা ৯০শতাংশ। যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। পায়ে হেটে যেতে হয় বহুদূর।

বড়থলি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের প্রংজাং পাড়ার মেম্বার মথি ত্রিপুরা বলেন, বড়থলি ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ড। জনসংখ্যা প্রায় ৫হাজার, ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের অধিক।
সরকার ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়ে সেখানে নির্বাচন দিয়ে জনপ্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের কাছে আমাদের দাবি বড়থলি ইউনিয়নটি সরকারি হিসেবের মধ্যে এনে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হউক। বড়থলির মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। বড়থলি থেকে রাঙামাটি জেলা শহরে আসতে হলে প্রায় ২দিন সময় লাগে। ২০১৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বড়থলি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নদরাং ত্রিপুরা বলেন,বড়থলি উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ করে গেছেন সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। যদিও টিন সেট ও টিনের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আবাসিক হোস্টেল ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর অভাব। একটি আবাসিক হোস্টেল ব্যবস্থা থাকলে এই দুর্গম এলাকার ছেলে মেয়েদের জন্য অনেক ভাল হতো। মিশন এনজিও দ্ধারা ৬-৭ টি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোরও নাজুম অবস্থা ও পরিস্থিতি। আমরা বড়থলিবাসী এই সব সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিএনপি’র জেলা সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু’র মাধ্যমে অবহেলিত বড়থলি ইউনিয়নের ৪-৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল রাঙামাটি জেলা শহরে এসে বড়থলি’র শিক্ষা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রথমে দেখা করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদারের সাথে পরে দেখা করেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ’র সাথে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বড়থলি ইউনিয়নের প্রতি সুনজর দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!