ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

২১ মাস পর বিএনপি নেতা কায়েছ কারাগার থেকে মুক্ত

পটিয়া (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

২১ মাস পর বিএনপি নেতা কায়েছ কারাগার থেকে মুক্ত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কায়েছ। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান বলে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খোরশেদ আলম। তার নামে দায়ের করা হত্যা মামলায় জামিন পাওয়ায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

এদিকে নিহত সোহেল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিএমসিসিআই) সভাপতি এবং কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ভাগিনা ও পটিয়া উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেমের ছোট ভাই।

জানা যায়, ইউপি নির্বাচনের জের ধরে ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল রাতে পটিয়া উপজেলা কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা বাজার এলাকায় মোহাম্মদ সোহেলকে (৩৮) ছুরিকাঘাতে খুন করে মোহাম্মদ শরিফ। এ ঘটনায় ২৩ এপ্রিল এলাকার বিতর্কিত সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম (বর্তমানে বিএনপির মামলায় কারাগারে আছে) বাদী হয়ে ইউপি নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কায়েছকে প্রধান এবং মোহাম্মদ শরীফ, মোহাম্মদ মনছুর, মোহাম্মদ সুমন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জসিমুল আনোয়ার খাঁন, মোহাম্মদ আজগর, কায়সার উদ্দিন জনিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার একদিন পর হামলার ছুরিকাঘাতকারী মোহাম্মদ শরীফকে আটক করে পুলিশ। সে সময় শরীফ রিমান্ডে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে শরীফ নিজে একাই ছুরিকাঘাত করে সোহেলকে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। কিন্তু তৎকালীন পটিয়া থানা পুলিশের ওসি রেজাউল করিম, এস আই সঞ্জয় কুমার ঘোষ, হাবিব ও পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমানের যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর বিএনপি নেতা কায়েছ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসার পথেই সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ, ২১ মাস পর তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে আজ সোমবার কারাগার থেকে মুক্তি পান।

পরে সে মামলা হতে সমাজ সেবক জসীমুল আনোয়ার খান, মোহাম্মদ আজগরকে খালাস দেওয়া হয়। অন্য আসামীরা জামিন আছেন। মামলার ২ নং আসামী মোহাম্মদ শরীফ দুই বছর ধরে কারাগারে আছেন।

এদিকে, পটিয়ায় বির্তর্কিত কাশিয়াইশ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জনরোষের শিকারে পড়ে কোন রকম প্রাণে বেঁচে গেলেও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। গত ১৮ আগস্ট উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের বির্তকিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সকালে পরিষদে যাওয়ার পর হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে পটিয়া থানায় নিয়ে আসে। সেদিন পরিষদ থেকে সেনাবাহিনীর টিম তাকে উদ্ধার করে আনার সময় ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেন হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা বিভিন্ন গাড়িতে করে মিছিল সহকারে থানায় এসে জড়ো হয়। সারাদিন পর্যন্ত হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা থানার গেইটের রাইরে অবস্থান করেন। তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা। সেদিন তার বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে থানায়।

১৯ আগস্ট কাসেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বুধপুরা গ্রামের ভুক্তভোগী নুর আয়শা বাদী হয়ে একটি চাঁদাবাজি মামলা এবং পটিয়া মাদ্রাসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র নুরুল হাসান বাদী হয়ে আরো একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করার পর আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর কাসেম চেয়ারম্যান আত্নগোপনে ছিলেন। ১৮ জুলাই চেয়ারম্যানের চেয়ার দখলে নিতে পরিষদে আসলে জনরোষের শিকারে পরিনত হন। তার বিরুদ্ধে বাড়িঘর, জমি দখলসহ এলাকায় বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!