ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দুর্গাদহ নদীতে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ: দুর্ভোগে স্থানীয়রা

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৭:১২ পিএম

দুর্গাদহ নদীতে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ: দুর্ভোগে স্থানীয়রা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর-উধুনিয়া-বাবুলিদহ আঞ্চলিক সড়কে ত্রিমোহনী ঘাটে দুর্গাদহ নদীর উপর নির্মানাধীন সড়ক সেতুর কাজ ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে। এতে ওই পথে চলাচলে স্থানীয় লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহনের জটিলতায় সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে বলে বলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লাপাড়া অফিস। সংশ্লিষ্ট বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর লিটন এই সেতুর ঠিকাদারের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। বাংলাদেশ সরকার এই সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সিরাজগঞ্জের এসই-এসসি (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, উক্ত সড়কে বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়নের ত্রিমোহিনি ঘাটে দুর্গাদহ নদী পারাপারে তারা প্রায় ৫০ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে ৪/৫ মাস নৌকাতে নদী পারাপার হতে হয়। শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমে গেলে প্রায় ৭ মাস নিজেরা চাঁদা দিয়ে বাঁশের মাচান তৈরি করে নদী পারাপার হয়ে থাকেন তারা। এই ঘাটে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি ছিল তাদের বহুদিনের। অবশেষে ২০২১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এই ঘাটে নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। শুরু হয় মাপজোক ও মাটি পরীক্ষার কাজ। বাংলাদেশ সরকার এই সেতু নির্মাণের জন্য ৬ কোটি ৯০ লাখ ৬৭ হাজার ১৮৭ টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এক বছরের মধ্যে এর প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন সেতুর উপরের একটি পাটাতন এবং দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ বাকি রয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতি ও ভুমি অধিগ্রহনের জটিলতায় সেতুটির কাজ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। এ অবস্থায় বিশেষতঃ উধুনিয়া, বড়পাঙ্গাসী ও লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদেরকে এই পথে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদীটি পানিপূর্ণ হয়ে অনেক প্রশস্ত হয়। দুই পাশে কোনো যাত্রী ছাউনি নেই। ফলে নৌকায় পারাপারের জন্য লোকজনকে বৃষ্টিতে ভিজে অপেক্ষা করতে হয়। ভুক্তভোগী লোকজন তাদের ভোগান্তি নিরসনে অবিলম্বে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

শুকলাই গ্রামের সেলিম রেজা, মনিরুল ইসলাম, ফজুলুল হক জানান, দুর্গাদহ নদীতে সড়ক সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় তাদের উক্ত আঞ্চলিক সড়কে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় শিক্ষার্থীদেরও নদী পারাপারে কষ্ট করতে হচ্ছে। এরা তাদের ভোগান্তি নিরসনে অবিলম্বে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বড়পাঙ্গাসী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর লিটন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী সরকার পতনের পর চেয়ারম্যান বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লাপাড়া অফিসের উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদের সঙ্গে কথা বললে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, দুর্গাদহ নদীর উপর সড়ক সেতু নির্মানের জন্য নদীর দুই পাশে ভুমি অধিগ্রহন করতে হয়েছে। কিন্তু অধিগ্রহনের পর ভুমি মালিকদের টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া বেশ লম্বা। ফলে ভুমি মালিকেরা টাকা না পাওয়ায় তারা সেতুর নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে এখন নদীতে
পানি রয়েছে। ফলে সেতুটির কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী অধিগ্রহনকৃত সংশিষ্ট ভুমি মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দ্রুত এটি নিরসন করে সেতুর অবশিষ্ট কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান এই প্রকৌশলী।

আরবি/জেডআর

Link copied!