সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

বাংলাদেশি নাগরিকের ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলো বিএসএফ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ১১:৫৬ পিএম

বাংলাদেশি নাগরিকের ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলো বিএসএফ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকের পাঁকা ঘর নির্মানের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকার আন্তর্জাতিক মেইন সীমানা পিলার নং ৯৪৬-এর সাব পিলার ২ এস-এর পাশে। ওই বাংলাদেশি নাগরিকের নাম আব্দুল মালেক।

আব্দুল মালেক তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বাবা ও ছোট ভাইসহ সবাই ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন। পৈত্রিক সুত্রে তার রয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ জমি। সেই জমিতে জীবনের শেষ সম্বল কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে শুরু করেছিল একটি টিনশেড পাঁকা ঘরের কাজ। খবর পেয়ে ভারতীয় বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গত ২১ জানুয়ারি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাঁধার মুখে পাঁকা ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ হওয়ায় সীমান্ত বসবাসরত পরিবারটি এক সপ্তাহ ধরে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। 

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মালেক পৈতিক সুত্রে পাওয়া ৫ শতক জমির উপর স্ত্রীসহ ছেলে দুলাল ও মিলনকে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে খড়ের ঘর তুলে বসবাস করে আসছিল। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করেন। অনেক কষ্টে কিছু টাকা পয়সা রোজগার করে ওই ভিটায় একটি টিনশেডের পাঁকা ঘরের কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে ৩টি কক্ষের ইটের গাথুনীর কাজ শেষের দিকে।

গত ২১ জানুয়ারি বিকালে ভারতীয় ১৩৮ ব্যাটালিয়নের অধিন ঝিকরী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পাঁকা ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা ওই পরিবারটিকে জানান, নোম্যান্স ল্যান্ডে কোন ধরণের পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। 

আব্দুল মালেকের ছেলে গার্মেন্টস কর্মী দুলাল মিয়া জানান, আমাদের বাড়ী করার মতো আর কোন জমি নেই। কিংবা অন্যত্র জমি কিনে বাড়ী করার মতো আমাদের সামর্থ্যও নেই।  অনেক কষ্টে রোজগারের টাকা দিয়ে একটি টিনশেড পাঁকা ঘর নির্মাণ করতে চেয়ে ছিলাম। কিন্ত বিএসএফের বাধাঁয় ঘর নির্মান করতে পারছি না। এই তীব্র শীতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কষ্টে ঝুপরি ঘরের মধ্যে বসবাস করছি।

কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আর্ন্তজাতিক সীমান্ত আইন লংঘন করায় বিএসএফ ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। বিএসএফ বাধাঁ দেওয়ায় আপাতত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। 

লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিন অনন্তপুর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিএসএফের বাধাঁ এবং সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭০ গজের ভেতর নির্মাণ কাজ হওয়ায় এটি বন্ধ রয়েছে। এব্যাপারে আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকও করেছি। 

আরবি/জেডআর

Link copied!