পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরাসরি কৃষকের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য মধ্য স্বত্বভোগী ও খাজনা খরচ ব্যতীত ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের জন্য কৃষক বাজার শুরু হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় কলাপাড়া পৌরসভা ও আমরা কলাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় শনিবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ভলিবল মাঠ সংলগ্ন (প্রেসক্লাব এর পশ্চিম পাশে) এ কৃষি বাজার শুরু হয়। শনিবার সকালে কৃষি বাজার পরিদর্শন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য যেমন লাউ, কুমড়া, বরবটি, করলা, বিভিন্ন শাক-সবজী ইত্যাদি কৃষকদের মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রয়ের জন্য এ কৃষক বাজার। সারা বছর কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সবজি চাষিদের জন্য চালু করা হয়েছে এ কৃষক বাজার। এখানে কৃষকরা সরাসরি তাঁদের উৎপাদিত সবজি খোলা বাজারে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবে। থাকছেনা কোনো মধ্যস্বত্বভোগী। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারাসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষক তাদের সবজি কলাপাড়ায় নেওয়ার জন্য আপাতত দুটি ভ্যান প্রদান করা হয়েছে। ভ্যানে নেওয়া সবজির জন্য ব্রিজের কিংবা হাটবাজারের কোনো টোল, খাজনা দিতে হবে না। সাধারণ মানুষকে ন্যায্যমূল্যে শাক-সবজি কেনার সুযোগের পাশাপাশি কৃষকরা সরাসরি হাতে পাবেন বিক্রির দাম।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তাঁদের উৎপাদিত শাকসবজি সহজভাবে বাজারজাত করার। এই সুযোগের কারণে একেকটি ভ্যানে করে প্রতিদিন অন্তত পালাকরে চারজন কৃষক বাজারে সরাসরি কৃষিপণ্য বিক্রির সুযোগ পাবে।
কৃষক জাকির গাজী (লুঙ্গি জাকির) বলেন, পাখিমারা থেকে প্রতিদিন এক ভ্যান শাকসবজি কলাপাড়া বাজারে নিয়ে বিক্রি করে বর্তমানে অন্তত ব্রিজের টোল, বাজারের খাঁজনা নিয়ে কমপক্ষে দুইশো থেকে তিনশো টাকা বাড়তি গুনতে হয়। এটি এখন আর লাগে না।
ক্রেতা গৌতম হাওলাদার বলেন, প্রচলিত বাজারের চেয়ে কৃষক বাজারের পণ্য দাম অনেক কম। একটি বড় সাইজর লাউ ২০ টাকায় ক্রয় করেছি।
ক্রেতা মো. রাকিব মির্জা বলেন, এ কৃষক বাজার থেকে কচু ও লতি কিনেছি মাত্র ৪০ টাকা দিয়ে। কম দামে কিনে অনেক খুশি।
আমরা কলাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুস সাকিব বলেন, শনিবার সকাল থেকে প্রতিদিন বেলা এগারটা পর্যন্ত বসবে এ কৃষক বাজার। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শনিবার এ বাজার পরিদর্শন করেছেন। কলাপাড়া পৌরসভা ও আমরা কলাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এ কৃষক বাজারের সার্বিক সহযোগিতা করছি।
কলাপাড়া প্রেসক্লাবের আহবায়ক হুমায়ুন কবির বলেন, সাধারণ বাজারের চেয়ে কৃষক বাজারের দাম অনেক কম। সাধারণ মানুষ এ বাজার থেকে উপকৃত হবে। আমিও এ বাজার থেকে কম দামে ক্রয় করেছি। ইউএনও মহোদয়কে ধন্যবাদ। আশাকরি এ বাজার টিকে রাখার জন্য ইউএনও সব ধরনের ভূমিকা রাখবেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এই মার্কেট টোল ফ্রি থাকছে। প্রতিদিন পাইকারি, খুচরা ক্রয়, বিক্রয়ের চার্ট থাকবে। ক্রেতারা সাশ্রয়ীমূল্যে কৃষিপণ্য কেনার সুযোগ পাবে। ভ্যানে সব ধরনের কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারবে।
আপনার মতামত লিখুন :