যশোরের চৌগাছায় ফুলকপি ২ থেকে ৫ টাকা প্রতি পিস দরে পাইকারি বিক্রি হলেও হাত বদলেই পাইকারি বাজারের মধ্যে অবস্থিত খুচরা বিক্রি কেন্দ্রে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি খুচরা বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে মূলা’র সরবরাহ কম থাকলেও পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২ টাকা কেজি।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে চৌগাছা বড় পাইকারি কাঁচাবাজারে ঢুকতেই দেখা যায়, একজন কৃষক হাক মারছেন ফুলকপি ৩টি পাঁচ টাকা, ৩টি পাঁচ টাকা। পাশ ফিরতেই দেখা যায়, বড় সাইজের (প্রতিটি কেজির উর্ধে) ফুলকপি আরেক কৃষক হাকছেন ১টি পাঁচ টাকা, ৩টি দশ টাকা।
পাইকারি বাজারের আড়ৎদার ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগের শুক্রবারও (২০ ডিসেম্বর) এসব সবজি প্রায় দ্বিগুন দামে পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে। বাজারে নতুন ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মিষ্টি কুমড়া, বিটকপির সরবরাহ স্বাভাবিক (বেশি না হয়ে একই রকম) থাকার পরও দাম কমে যাওয়ার কারন হিসেবে আড়ৎদার ও কৃষকরা বলছেন এ অঞ্চলের সবজি যেসব অঞ্চলে বেশি বিক্রি হতো, সেসব এলাকার সবজি বাজারে এসে যাওয়ায় ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা ও দাম কমে গেছে।
বড় কাঁচা বাজারের আড়ৎদার মুকুল হোসেন বলেন, শুক্রবার পাইকারিতে মূলা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১ থেকে দুই টাকা দরে, শিম ৮ থেকে ১০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৮ থেকে ২৫, বেগুন ১৫ থেকে ২৫, বাঁধাকপি (প্রতিটি) ৫ থেকে ৭, ফুলকপি (প্রতিটি) ২ থেকে ৫, বিটকপি ৫ থেকে ৬, পেঁয়াজের (ফুল) কালি ৮ থেকে ১০, কাঁচাকলা ৮ থেকে ১৫, পালংশাক ৪ থেকে ৫, পটল ৪০ থেকে ৪৫, মরিচ ৪০ থেকে ৪৫, দেশি নতুন পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। লাউ (প্রতিটি) বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা দরে। অন্যদিকে নতুন আলু (স্থানীয় নয়, দেশের অন্য অঞ্চল থেকে আসা) ৪০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে।
চৌগাছা সদর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, শুক্রবার প্রতিটি ফুলকপি ২ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। যা গত বুধবারেও ৮ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন।
তবে পাইকারি বাজারের মধ্যেই (১০ ফুট দূরত্বে) খুচরা বিক্রি কেন্দ্রে এবং শহরের খুচরা বাজারে (একশ মিটার দূরের) একই ফুলকপি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ২২, শিম ২৫ থেকে ৩০, বেগুন ৩০ থেকে ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০, গোল আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে পাইকারিতে এই মূল্য কমে যাওয়ার প্রভাব খুচরা বাজারে তেমন একটা পড়বে না বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ি (আড়ৎদার) মুকুল হোসেন। তিনি বলেন, খুচরা বিক্রেতারা যে পরিমান সবজি ক্রয় করেন তার সম্পূর্ণটা বিক্রি হয়না। তাছাড়া খাজনা, জায়গার ভাড়া, ব্যবসায়ীর মুজুরী ও ইনভেস্ট অনুযায়ী লাভ সব হিসেব মিলিয়ে তাদের বিক্রি করতে হয়।
এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম এত কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চট্রগ্রাম, নোয়াখালি, কুমিল্লাসহ দেশের যেসব অঞ্চলে চৌগাছার সবজি বিক্রি হয় সেসব এলকায় স্থানীয় খেতের সবজি বাজারে চলে এসেছে। এ কারনে ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ আগের চেয়ে বেশি না হলেও দাম কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুসাব্বির হোসেন বলেন, দেশের আবহাওয়া অনুকুল থাকায় সব এলাকায় স্থানীয় সবজি বাজারে এসে গেছে। ফলে আমাদের বাজারে সরবরাহ একই থাকলেও ব্যাপারীদের কাছে চাহিদা কমে গেছে। এ জন্য দাম কিছুটা কম। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছি ও খোঁজ খবর রাখছি।
আপনার মতামত লিখুন :