কখনো সাংবাদিক, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বহু অপকর্মের হোতা মনছুর আলম মুন্নাকে অবশেষে চকরিয়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভুইয়ার কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি ও দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
গত ২৫ ডিসেম্বর বুধবার রাত ২ টার সময় কক্সবাজার সদর থানা এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃত মুন্না রামু উপজেলার গর্জনিয়া, দক্ষিন বড় বিল গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ও বর্তমানে কক্সবাজার শহরের পূর্ব ঘোনার পাড়া সেলিম ড্রাইভারের ভাড়া বাসায় থাকেন।
দায়েরকৃত মামলার এজাহারে জানা যায়, ২৪ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টা হতে বিকাল পৌনে ৫টার সময় কথিত সংবাদ কর্মী মনছুর আলম মুন্না নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল হতে চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভুইয়া এর ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে বানোয়াট, মিথ্যা এবং অবমাননকর বিভিন্ন কথা উল্লেখ করে একটি সংবাদ প্রস্তুত করতঃ প্রেরন করে। পরবর্তীতে উক্ত মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করার ভয় দেখিয়ে কৌশলে চাঁদাদাবী করে। উক্ত ঘটনায় মনছুর আলম মুন্নার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানার মামলা নং-৩৮, তারিখ- ২৫/১২/২০২৪ ইং, জিআর-৫২৭/২০২৪, তারিখ- ২৫/১২/২০২৪ ইং ধারা- আইন শৃংখলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন/২০০২ (সংশোধনী/২০১৯) এর ৪(১) দায়ের করা হয়। এই মামলার আসামী চাঁদাবাজ মনছুর আলম মুন্নাকে বুধবার রাত পৌনে ১টার সময় গ্রেপ্তার করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মনছুর আলম মুন্নাকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, মনছুর আলম মুন্না একজন পেশাদার চাঁদবাজ। সে একাধিকবার চাঁদাবাজী সহ বিভিন্ন মামলায় কারা বরণ করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কখনো সাংবাদিক, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা সহ বহু অপকর্মের হোতা মনছুর আলম মুন্না। এরআগে চলতি বছর ৩ এপ্রিল র্যাবের মিথ্যা সোর্স পরিচয়ে ক্রসফায়ার থেকে বাঁচানোর কথা বলে একলাখ টাকা চাঁদা আদায় ও আরও ১লাখ টাকা নেওয়া জন্য হুমকির অভিযোগে আটক করেছে র্যাব-১৫ এর হাতে আটক হন। এ মামলায় সাড়ে ৪ মাস জেলে ছিলেন।
এই মুন্না র্যাবের মিথ্যা সোর্স পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে কথিত ক্রসফায়ার ও মাদক মামলাসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একজন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় এবং আরও ১ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবিতে ক্রমাগত ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছিল।
এ ঘটনায় চাঁদাবাজ মনছুর আলম মুন্না (৩০)কে কক্সবাজার পৌরসভার লালদিঘীরপাড় সোনালী ব্যাংকের পাশের গলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মুন্না কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ার দক্ষিণ বড়বিল এলাকার আবদুস সালাম ছেলে মনছুর আলম মুন্না (৩০)। সে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব ঘোনার পাড়া সেলিম ড্রাইভারের বাড়ীতে ভাড়া থেকে সাংবাদিকসহ র্যাব এবং বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয় দিয়ে চাঁদা আদায় ও মাদক ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, সবার কাছে তিনি পরিচিত সাংবাদিক হিসেবে। সবাই যেন বিশ্বাস করে এজন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমের নিউজ কপি করে নিয়মিত ফেসবুকে পোষ্ট দেন! কখনো গলায় কার্ড ঝুলিয়ে ছবি তুলেছেন সাংবাদিক প্রমাণে! আবার সাধারণ মানুষের কাছে তিনি পরিচিত ক্ষমতাবান হিসেবে! কেউবা আবার চেনেন র্যাব পুলিশের সোর্স হিসেবেও! কিন্তু আসলে তিনি একজন মহাপ্রতারক। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করাই তার পেশা।
এই প্রতারক মনছুর আলম মুন্না এর আগে কক্সবাজার সদর থানা কর্তৃক ১ম বার আটক ( ভুয়া সাংবাদিক ও চাঁদাবাজি মামলায়) র্যাব-১৫ কর্তৃক ২য় বার আটক (পর্ণোগ্রাফি মামলায়) র্যাব-১৫ কর্তৃক ৩য় বার আটক (চাঁদাবাজি মামলায়) ও চকরিয়া থানা কর্তৃক ৪র্থ বার আটক (চাঁদাবাজি মামলা) এছাড়া পাবলিক কর্তৃক গণধোলাই খেয়েছে বহুবার।
আপনার মতামত লিখুন :