নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের ব্রাহ্মণখালী পূর্বাচল লেকপাড় থেকে উদ্ধার হওয়া ৭ টুকরো লাশের পরিচয় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত মরদেহের টুকরোগুলো হলো ফতুল্লার ডাইং ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমের। সেই সাখে হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড মূল হোতা নিহতের প্রেমিকা রুমা (২৮) ও তার সহোযোগি রুকু (২৮) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে তাদেরকে রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হেক্সো ব্লেড, চাপাতি, নিহতের সাফারি পোষাক উদ্ধার করে পুলিশ।
এরআগে বুধবার রুপগঞ্জে ব্রাহ্মণখালী পূর্বাচল লেকপাড় থেকে তিনটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় মরদেহের খন্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা হয়। ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম ফতুল্লা থানার কাঠেরপুল এলাকার চাদঁ ডাইংয়ের পরিচালক ও আলেক চাঁন বেপারির পুত্র।
গত রোববার সে গুলশান এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পরপর নিহতের পুত্র ওবায়দুল ইসলাম শিবু বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (নং-৮০৬) করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তারকৃত ওই নারীর সাথে মাসুমের অবৈধ সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে সে স্বীকার করেছে। তিনি আরো বলেন, বুধবার ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সাত টুকরো উদ্ধারের পর পুলিশ তাৎক্ষণিক এর তদন্ত শুরু করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
এরপর গুলশান থানার ওই জিডির সূত্র ধরে আমরা এই ডিসিস্টের পরিচয় জানতে পারি। নিহত জসিম উদ্দিন মাসুম গ্রেপ্তারকৃত রুমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রায় সময় মিরপুরের শেওরাপাড়ার একটি ভাড়া বাসার ফ্ল্যাটে মিলিত হতো।
এদিকে, সেই ফ্ল্যাটে নিহত ব্যবসায়ী জসিমউদ্দিন অপর এক নারীকে নিয়ে যায়। সেই বিষয়টি জানতে পারে গ্রেপ্তারকৃত রুমা রাগে ক্ষোভে রোববার নিহত জসীমউদ্দিন কে মিরপুরের সেই ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে দুধের সাথে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে জসীমউদ্দিন কে পান করায়। এতে করে সে অচেতন হয়ে পরলে তার দেহ বেশ কয়েকটি টুকরো কর। পরবর্তীতে টুকরোগুলো রুমা নিজেই দু দফায় উবারে এবং সিএনজিতে করে ফেলে যায়।
তিনি আরো বলেন, আমরা লাশের টুকরা ও এই কাজে ব্যবহৃত চাপাতি ও জামার টুকরো উদ্ধার করেছি। এ কাজে রুমা সহ অপর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে গাড়িতে করে বের হয়ে গুলশান যান জসিম উদ্দিন। এর পর ব্যক্তিগত গাড়িচালককে ছেড়ে দেন। চালককে জানিয়েছিলেন, অন্য গাড়িতে নারায়ণগঞ্জের কারখানায় যাবেন। তবে রাতে বাসায় না ফেরায় ও মোবাইল বন্ধ থাকায় পরদিন গুলশান থানায় জিডি করেন তার বড় ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, স্থানীয়রা বুধবার সকালে লেকের পাড়ে তিনটি কালো পলিথিন ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে এক এক করে পলিথিনের ব্যাগগুলো খুললে একজন পুরুষের শরীরের মাথা, দুটি হাত, শরীরের পেছনের অংশ, নাড়ি ভুঁড়ি, বাম পা, বাম উরুর কাটা অংশ উদ্ধার করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :