সাতক্ষীরা আশাশুনি থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে শিশু রাহি হত্যর মামলার প্রাধান আসামি রেজোয়ান কবির জনিকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে (১৬ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিং এ এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির আগরদাড়ি এলাকার আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে। হত্যারকান্ডের স্বীকার হওয়া শিশু নূসরাত জাহান রাহি (৯) একই এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। সে আগরদাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ছাত্রী ছিল বলে জানা গেছে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর হত্যাকান্ডের স্বীকার শিশু নূসরাত জাহান রাহি আসামির সম্পর্কে প্রতিবেশী ভাতিজি।
আসামি ইতিপূর্বে ঢাকার একটি লিফট কোম্পানীতে চাকরি করতো। চাকরি করা কালীন একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে নয় মাস আগে বিয়ে করে। এরপর ৫ মাস আগে আসামির চাকরিটি চলে যাওয়ায় সে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। চাকরি না থাকার কারণে সে অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগতেছিল এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এরপর থেকে তার পিতার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা চেয়ে না পেয়ে সে বিকল্প চিন্তা করতে থাকে। একপর্যায়ে তখন তার ভিকটিম নুসরাত জাহান রাহি`র কানে থাকা স্বর্ণের এক জোড়া রিং এর কথা মনে পড়ে যায়। ঘটনার দিন অর্থাৎ শনিবার সকালে শিশু নুসরাত জাহান রাহি তার বান্ধবী মিতা বসুর বাড়ীর সামনে খেলা করছিল। ওই সময় তাকে মোড়ে যাওয়ার নাম করে ডাক দিয়ে নিয়ে যেতে থাকে পথিমধ্যে মাওলানা মো. সোলাইমান আজিজীর পুকুরের পাশে গিয়ে আসামি তাকে পাশের খেতে হলুদ তুলতে যাওয়ার কথা বলে। এরপর হলুদ ক্ষেতে গিয়ে তার কানে থাকা স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নেওয়ায় শিশুটি বাড়ীতে গিয়ে বাবা-মাকে বলে দিতে চায়। একপর্যায়ে আসামি রেজোয়ান কবির জনি শিশু নূসরাত জাহান রাহিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর প্রমান লোপাটের জন্য শিশুটিন থাকা গেঞ্জি ছিড়ে হাত এবং পা বেধে হলুদ ক্ষেতের পাশে পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন দুপুরে আসামি কানের দুল জোড়া নিয়ে বুধহাটা বাজারের পলাশ জুয়েলার্সের মালিক অজয় পাইনের কাছে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিকালে স্থানীয় লোকজন নুসরাত জাহান রাহির লাশ পুকুরে ভাসতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ওই দিন আসামি রেজোয়ান কবির জনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এরপর সে হত্যারকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করে। এই ঘটনায় ইতিপূর্বে আশাশুনি থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-০৪। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
আপনার মতামত লিখুন :