বিয়ের নামে বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট, প্রতারণা-জালিয়াতি ও নিরীহ লোকদের মামলায় ফেলে হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গার বহুলালোচিত নারী রুপার বিরুদ্ধে। তার ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। তার প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে তাকে গ্রেপ্তার এবং কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন ভুক্তোভোগী মিরাজুল ইসলাম মামুন।
জীবননগর পৌর সভার ইসলামপুর গ্রামের মো. সোহরাব হোসেন শেখের ছেলে মো. মিরাজুল ইসলাম মামুন ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা পশুহাট পাড়ার পটে আবু তাহের বাদলের মেয়ে রুপা খাতুন (৩৫) এ পর্যন্ত ৩ এর অধিক বিয়ে করেছেন। বিয়ে করে কিছুদিন পর সেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া এবং তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা। তার মূল টার্গেট সম্পদশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী ও প্রবাসী পুরুষ। প্রথমে টার্গেট নিশ্চিত করে তিনি ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে নিজ দেহের সৌন্দর্য ও কথা মালার মারপ্যাঁচে আটকে ফেলেন টার্গেটকৃত পুরুষদের।
উল্লেখ্য, রুপা খাতুন প্রথম বিয়ে হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ওই পক্ষের মোছা. নাসরিন নামের একটি (১৯) বছরের মেয়ে আছে। বেশ কিছুদিন সংসার করে স্বামীকে তালাক দিয়ে দেন রুপা। দ্বিতীয় বিয়ে করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগনজ বাজারের আব্দুল মোতালের ছেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুন্নাকে। পরবতীতে মুন্নার মৃত্যুর পর ২০২৩ সালে জীবননগর পৌর সভার ইসলামপুর গ্রামের সোহরাব হোসেনের কাতার প্রবাসী ছেলে মিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে করেন।
কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে রুপার উশৃংখল জীবনযাপন এবং ও উগ্র আচরণের শিকার হন স্বামী মিরাজুল ইসলাম। মিরাজুল প্রতিবাদ করায় তাকে তার বাড়িতে এক বছর আটক করে রাখেন। একপর্যায়ে মিরাজুল বাড়ি থেকে পালিয়ে এলে তার বিরুদ্ধে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২৫লক্ষ টাকা নিয়ে এ বাড়ি থেকে পালিয়েছে মমে অভিযোগ তোলেন। এ ঘটনায় একই বছরে মিরাজুলের নিকট থেকে অর্থ আদায় করতে রুপা ২০২৩ সালে মিরাজুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী মিরাজুল ইসলাম বলেন, রুপার বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে রুপার মিথ্যা মামলায় আমি জেল খেটেছি। সে সময় তার বাড়িতে পুলিশের আনাগোনা ছিল অনেক যার ফলে সে যা বলতো পুলিশ তাই করতো। তার বাড়িতে নিয়মিত মদের আড্ডা বসতো সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের কর্মকতারা আসতেন। আমি গত শুক্রবার বিকালে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি ।ইতোমধ্যেই সে আমাকে তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে হত্যা করবে বলে হুমকি ধামকি প্রদান করছেন। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ না নিলে তিনি এভাবে একের পর এক বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে তাদের অর্থ-সম্পদ লুটে নেবে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার পূর্বক তার সব অপকর্ম তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করেন তিনি।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, রুপার নামে একটি মাদকের লাইসেন্স আছে যার লাইসেন্স নাম্বার ১৮১/২০২২-২০২৩ সে এর আগে জীবননগর উপজেলার উথলীতে একটি কুটুম বাড়ি নামের একটি ফুড পাক দেন সেখানে তিনি ফুড পাকের আড়ালে মাদক বিক্রি করতেন। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করার একাধীক অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে রুপা খাতুনের সাথে মোবাইলে একাধীকবার কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলেও ফোনটি রিসিপ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচাজ (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, মিরাজুল ইসলাম নামের একজন জীবননগর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেছে। তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো ।
আপনার মতামত লিখুন :