ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

সাতক্ষীরায় শীতের শুরুতেই চলছে খেজুরের রস সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০১:১১ এএম

সাতক্ষীরায় শীতের শুরুতেই চলছে খেজুরের রস সংগ্রহ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের সাতক্ষীরা জেলায় শীতের শুরুতেই চলছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ। তবে উৎপাদন কম ও দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা বেশি থাকায় দাম অনেক বেশি। যার কারণে নিন্ম আয়ের লোকজন খেজুরের রস গুড় খেতে পারছে না। কৃষি বিভাগ বলছে, শীত কম, মজুরি ও জ্বালানি দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক সব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে না। সাধারণ মানুষ বলছে সরকার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করলে দেশ মিষ্টির চাহিদা পূরণ হবে ও মানুষ আগের মত রস গুড় পিঠা পায়েশ খেতে পারবে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রায় দুই লক্ষ খেজুর গাছ আছে। তার মধ্যে ৯০ হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হবে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ শত মেট্রিক টন। শীতের শুরুতেই শিবলীরা গাছ কেটে রস সংগ্রহ শুরু করেছে। সাতক্ষীরা বেশিরভাগ উপজেলাই বিভিন্ন মোড়ে খেজুরের রস, গুড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস ও মিষ্টি। এসব দোকানে ভীড় করছে নারী পুরুষসহ সব ধরনের মানুষ।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া এলাকার নাঈমুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম জানান, ঋতু চক্রের আবর্তে শীত আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারার সাথে মিশে আছে। জেলায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে শিবলীরা। ইতিমধ্যে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেছে শিবলীরা। আর এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ চলবে চৈত্র মাস পর্যন্ত। খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। খেজুরের গুঁড় ও মিষ্টি কেজি ৩শত থেকে ৪শত টাকা হওয়ায় গরীব মানুষ খেতে পারছে না।

সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার ত্রিমুনিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান, সরসকাটি গ্রামের আব্দুল কাদের জানান, শীত মৌসুম কম, জ্বালানি, মজুরি দাম অনেক বেশি। তার কারণে গাছ মালিকরা এখন আর আগের মত রস সংগ্রহ করছে না। অনেক গাছ বছরের পর বছর তোলা বা কাটা হচ্ছে না। যার কারণে রস উৎপাদন কমে গেছে। আগের মত পাওয়া যাচ্ছে না খেজুরের রস ও গুড়। গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস,গুড় আর নতুন ধানের চাউলের পিঠা পায়েস নবান্ন উৎসব নেই বললেই চলে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মুস্তাক আহমেদ, আতাউর রহমান জানান, আগের মত এখন আর শীত মৌসুমে বাড়িতে বাড়িতে নবান্ন উৎসব দেখা যায় না। দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারছে না। জেলার যে পরিমাণ রস গুড় উৎপাদন হয় তার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, মজুরি বৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম বেশি হওয়ায় মানুষ এখন আর খেজুর গাছ কাটতে চায় না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে খেজুর গাছ কাটা শিবলি তৈরি করতে হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!