শুনতেছি আবার নাকি বড় একটা ঝড় আসবে, লোকজন দোকান পাটে বলাবলি করিতেছি, খবরে দেখাচ্ছে। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে সূর্য দেখা পায়নি। ঝড় হলে আমাগে এলাকায় খুব বড় বিপদ হয়। আমাগে দশহালিয়া বাঁধ বার বার ভেঙে যায়। বৌ, বাচ্চা নিয়ে বাইরে পরের বাড়িতে থাকতে হয়। আগে কয়েকটা ঝড়ে আমাগে মেলা ক্ষয় ক্ষতি হয়ছে। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে তাই ঘরটা ঠিক করছি। ঝড়ের ঝামটে ঘরের মধ্যে থাকা যায় না। বিকেলে কয়টা শুকনো খাবার কিনে এনে রাখবো। রাতে কোথাও একটা ভালো জায়গায় থাকতে হবেনে। প্রতিবার ঝড় হলে আমার বাড়ি ভেঙে যায়। নদীর চরে বাস করি। খুব কষ্ট জীবন কাটাতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে এভাবে কথাগুলো বলেছিলেন কপোতাক্ষ নদীর পাড়ের দশালিয়া গ্রামের বাসিন্দা
মো. নূরুজ্জামান। কয়রা নদীর পাড়ের মহেশ্বরীপুর গ্রামের মো. ইবাদুল শিকারী বলেন, ঝড় আসবে তাই আমরা আতঙ্কে আছি। আমাকে বাড়ির সামনের এই বাঁধ ভেঙে গেলে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে। সারারাত আমাদের ঘুম হবেনা। পরিবার নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। বাড়ির পাশে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নেই অনেক দূরে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে হয়। বাড়িতে কডা ছাগল আছে এগুলো কোথায় রাখবো তাই নিয়ে ভাবতেছি । উপজেলা সদরে ভ্যানচালক কালনা গ্রামের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ডানার জন্য রাস্তাঘাটে তেমন কোন লোকজন বেরোচ্ছে না সকাল থেকে অল্প কয়টা টাকা আয় হয়েছে। এখন বাড়ি যাচ্ছি
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় “দানা” আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। সকল সমুদ্রবন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঝড়টি এই মুহুর্তে মোংলা বন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিন-দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে যেকোন সময় আঘাত হানতে পারে দানা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় কয়রা উপজেলা ১১৬ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের কন্টোল রুম খোলা আছে, সাইক্লোন শেল্টার গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সিপিপি সদস্যরা কাজ করছে। মানুষের সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। নিরাপদ খাবার পানি ও শুকনো খাবার মজুদ আছে। আমি বিভিন্ন জায়গার ভেড়ি বাধ পরিদর্শক করেছি। সেখানে অসুবিধা আছে সেজায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। উপজেলার সকল কর্মকর্তারা ষ্টেশনে আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :