ঢাকার ধামরাইয়ে ননদ, শাশুড়ি ও নানী শাশুড়ির নির্যাতনে কুলসুম আক্তার (৩০) নামে এক সন্তানের জননীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ধামরাই থানায় শাশুড়িসহ ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। পরে নানী শাশুড়ি জোবেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পূর্ব পাইকপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। একই এলাকার আয়নাল পাগলার ছেলে ইয়ার হোসেনের স্ত্রী ছিলেন কুলসুম আক্তার। নিহত কুলসুম আক্তার নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার নোয়াপাড়া গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে। নিহতের শরীরে, হাতে, মাথায় প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আসামীরা হলেন-নিহতদের শাশুড়ি বানু বেগম ওরফে সূর্য বানু, শ্বশুর আয়নাল পাগলা, নানী শাশুড়ি জোবেদা বেগম ও ননদ ইয়াসমিন আক্তার।এদের মধ্যে নানী শাশুড়ি জোবেদা বেগম কে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত কুলসুম আক্তার কে শাশুড়ি, ননদ ও নানী শাশুড়ি মিলে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কলহের জেরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী ইয়ার হোসেনের সামনেই নির্মমভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ননদ ইয়াসমিন ইট দিয়ে মাথায় কুলসুমকে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে গতকাল রাতেই বিষয়টি জানাজানি হলে নিহতের ভাই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নানী শাশুড়ি জোবেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। বাকি আসামিরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে।
নিহতের বোন মাকসুদা আক্তার বলেন, আমার বোনের দেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করায় প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়ে মারা গেছে। পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন মানুষকে এইভাবে কেউ মেরেই ফেলে। আমার বোনের ৫ বছরের ছোট একটি ছেলে রয়েছে। এখন তার কি অবস্থা হবে।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী ইকবাল হোসেন বলেন, আমার ভগ্নিপতি সহজ সরল মানুষ। তাকে সহ আমার বোন কে বোনের শাশুড়ি, ননদ ও নানী শাশুড়ি মিলে মারধর করেছে। ননদের ইটের আঘাতে মাথা ফেটে রক্ত ক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই আমার বোন মারা যায়। এর সঠিক বিচার আমরা চাই।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতেই নিহত কুলসুম আক্তারের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। রাতেই আসামী নানী শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আসামি জোবেদা বেগমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের কাজ চলমান আছে।
আপনার মতামত লিখুন :