ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে বিজয়নগর থানার এক পুলিশ সদস্যের পরকীয়ার নামে কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে গত ২ দিন আগে।
উল্লেখ, করা হয়েছে পরকিয়া প্রেমের বাঁধা দেওয়ার সাংবাদিক এস এম গোলাম কিবরিয়া কে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের প্রবাসী গোলাম মোস্তাফা বাবুলের স্ত্রী রোমা আক্তার ও বিজয়নগর থানার এএস আই মোঃ আব্দুল করিমের কথোপকথনের স্কিনশর্ট সোস্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা হয়। গোলাম কিবরিয়া মোস্তফা বাবুলের আপন ছোট ভাই ও রোমা আক্তার ও গোলাম কিবরিয়া সম্পর্কে দেবর ভাবি হয়। গত ৭ মাস আগে মোস্তাফা বাবুলের স্ত্রী ও সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়ার পারিবারিক ঝামেলা হয় একাধিকবার।
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার বড় ভাই প্রবাসী মোস্তফা বাবুলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, গত ২ বছর যাবৎ মোস্তফা প্রবাসে এই সুযোগে কিবরিয়া ও তার আরেক বড় ভাই প্রায়ই রোমা আক্তারের কাছে টাকা চাই।টাকা না দিলে মারধর করেন। একাধিকবার রোমা আক্তারের গলার চেইন, হাতের আংটি, কানের দুল বন্দক ও বিক্রি করেন জোরপূর্বক।
তিনি আরো জানান, রোমা আক্তার আমার পরামর্শেই থানায় মামলা করেছে। এবং আমার স্ত্রীর নামে যে পরকিয়ার নামে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে তার বিচার চাই। আর পুলিশকে কল দেওয়ার জন্য আমি নিজেই বলেছিলাম রাত আনুমানিক ১২ টার সময় কিবরিয়া আমার স্ত্রীকে মারধরের জন্য আমার স্ত্রীর রুমে হামলা করে পরে আমি ভিডিও কলে থাকাকালীন অন্য একটি ফোন দিয়ে পুলিশ কে কল দেওয়ার কথা বলি। এক পর্যায়ে কিবরিয়া ঘরের দরজা ভেংগে ঘরে ঢুকে রোমা আক্তারকে মারধর করেন এবং আমি যে ফোনে ভিডিও কলে ছিলাম সেই ফোনটি ফ্লোরে ফেলে ভেঙে ফেলে। আরেকটি দিয়ে পুলিশের সাথে মেসেজ লিখে স্কিনশর্ট দিয়ে পরকিয়ার নাম রটাচ্ছে। পুলিশের সাথে আমার স্ত্রী রোমা আক্তারের কোনো অবৈধ সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে রোমা আক্তার জানান, কিবরিয়া প্রায়ই রোমা আক্তারকে কু প্রস্তাব দিতে রাজি না হওয়ায় মারধর করতেন। টাকা চাইতেন টাকা না দিলেই মারধর করতেন। পরবর্তীতে আমি আমার স্বামী মোস্তাফা বাবুলকে জানাই ও কয়েকবার গোপনে ভিডিও কলে এ সব কর্মকান্ড দেখালে আমার স্বামী আমাকে বলে কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার জন্য। এসব ঘটনায় একাধিকবার পারিবারিক ভাবে শালিস হলেও কিবরিয়া তা মানেন নি। লাষ্ট যে ঘটনা ঘটে কিবরিয়া রাত ১ টার দিকে ধর্ষণ চেষ্টা করলে আমি জোরে জোরে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা আমাকে উদ্ধার করে। এর আগেও ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ এসে আমাকে কিবরিয়ার হাত থেকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আমি বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করি।
গত কয়েকদিন আগে কিবরিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার পর থেকেই কিবরিয়ার সহকর্মীরা আমার এবং পুলিশের মাঝে পরকিয়া আছে বলে সংবাদ প্রকাশ করছে।
রোমা আক্তার আরো জানান, পুলিশের সাথে আমার কোনো পরকিয়ার সম্পর্ক নেই।মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে উনার সাথে আমার কয়েকবার কথা হয়েছে এবং এ বিষয়ে আমার স্বামী অবগত আছেন। করিমের সাথে আমার ফোন থেকে লেখার ও স্কিনশর্ট গোলো কিবরিয়া নিজেই লিখেছে এবং ভিডিও কলের স্কিনশর্টটি কিবরিয়া জোরপূর্বক ভাবে কল দেওয়ায় আমাকে। এ সময় আমার স্বামী মোস্তফা বাবুল আমার অন্য একটি মোবাইল দিয়ে ভিডিও কলে ছিলেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই আব্দুল করিম বলেন, একটা অভিযোগের ব্যাপারে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। রোমা আক্তারের সাথে উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কথা হয়েছিল। তবে রোমা আক্তারের সাথে পরকীয়া প্রেম বা অবৈধ কোনো সম্পর্ক নেই।
ফোনে কথা ও মেসেজ এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, রোমা আক্তারের স্বামী মোস্তাফা বাবুল প্রবাস থেকে আমাকে কল দিয়ে অনুরোধ করে যে কিবরিয়া তার স্ত্রীর রুমে ঢুকার চেষ্টা করছে এ বিষয় গুলো দেখার জন্য। তার পর আমি রোমা আক্তারের ফোনে ভিডিও কল দিয়ে কথা বলি এবং এ সময় রোমা আক্তারের স্বামী মোস্তাফা বাবুলও অন্য একটি ফোন দিয়ে ভিডিও কলে ছিলেন। এর বাইরে আর কিছু নেই আমাদের মাঝে। এ বিষয়ে কিবরিয়া আমার বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করেছে এবং এটার তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গোলাম কিবরিয়া গত ৬ অক্টোবর রোববার রাত আনুমানিক ২ টায় তার বাড়ি থেকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় বিজ্ঞ আদালত হতে গ্রেফতারী পরোয়ানামুলে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এসব মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবী তাদের।
জানতে চাইলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ৬ তারিখে নারী ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় বিজ্ঞ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা বলে গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সাংবাদিক এএসআই আব্দুল করিম কে হেয় প্রতিপন্ন এবং ভুক্তভোগী নারীকে জরাইয়া ঘটনাকে অন্যদিকে ধাবিত করার জন্য মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে। আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :