বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলা শিক্ষকের অপসরণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় লালমনিরহাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনরত লালমনিরহাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজাকার পুত্র বলে গালি দেয় ওই বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান। তখন বিষয়টি নজরে আসলে ছাত্রদের তোপের মুখে পড়ে ওই শিক্ষক। পরে ওই শিক্ষক কৌশলে ৫ মাসের দীর্ঘ ছুটি নিয়ে গা ঢাকা দেয়। ছুটির মেয়াদ শেষে মঙ্গলবার (১৪জানয়ারী) ওই শিক্ষক পুনরায় বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস বর্জন করে রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলন শুরু করে। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক কামরুজ্জামানকে বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবী জানান।
বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুয়াজ বলেন,শিক্ষক কামরুজ্জামান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যখন আমরা শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নেই। তখন তিনি আমাদের প্রকাশ্যে রাজাকার পুত্র বলেছেন। ওই শিক্ষককে আমরা বিদ্যালয়ে আর দেখতে চাইনা। আমরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ওই শিক্ষকের বিদ্যালয় থেকে অপসারণ চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জোবায়ের শাহাদাত মানববন্ধনে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, শিক্ষক কামরুজ্জামান আওয়ামীলীগের দোসর। তিনি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজাকার পুত্র বলে অপরাধ করেছেন। তার শুধু অপসারণ নয়, আমরা তার শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক চৌধুরী বলেন, শিক্ষক কামরুজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকার পুত্র বলেছেন - এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে সময়কার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ এর নির্দেশে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা রংপুর অঞ্চল রংপুর বরাবর দরখাস্ত প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু গত ৫ মাসেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযুক্ত শিক্ষক ওই জেলা প্রশাসকের সহায়তায় ৫মাসের দীর্ঘ ছুটি নেয়। ছুটির মেয়াদ শেষ হলে তিনি পুনরায় বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা তার অপসারণের দাবিতে আবারও আন্দোলন করেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :