ঢাকা বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পল্লী বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে ৫ টাকা ক্ষতি করছেন ডিজিএম সামিউল কবির

আফ্রিদি আহাম্মেদ, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪, ০১:৫৪ পিএম

পল্লী বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে ৫ টাকা ক্ষতি করছেন ডিজিএম সামিউল কবির

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হরিরামপুর জোনাল শাখার ডিজিএম সামিউল কবির নির্মাণাধীন মিটারের জায়গায় শিল্প মিটার সংযোগ দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে ৪ টাকা ৩৯ পয়সা ক্ষতি করছেন। যার ফলে ইউনিট প্রতি ৪ টাকা ৩৯ পয়সা হারাচ্ছে সরকার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নের লেছড়াগঞ্জ বাজারের বেইলি ব্রিজের পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে  একটি ব্রিজ। ব্রিজটিতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য মিটারের প্রয়োজন হয় । যা নিয়ম অনুযায়ী নির্মাণাধীন মিটার স্থাপন করার নির্দেশ রয়েছে। 

সেই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কংক্রিট এন্ড স্টিল টেকনোলজি লিমিটেড ও হরিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম সামিউল কবিরের যোগ সাজসে শিল্প মিটার সংযোগ প্রদান করা হয় । ব্রিজের পাশে থাকা রাইস মিলের মালিক উত্তম কুমার মন্ডল এর নামে এই শিল্প মিটার রয়েছে। 

উত্তম কুমার মন্ডল দীর্ঘদিন এলাকায় না থাকায়, এই মিটার সংযোগ দিয়ে তার বিনিময়ে পল্লী বিদ্যুৎ এর কর্মকর্তারা নিয়েছেন ৬৩ হাজার টাকা। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী ডিজিএমকে ৫০ হাজার টাকা সরকারি ফিস প্রদান করেছেন‌। এরমধ্যে উত্তম কুমার মন্ডলের বকেয়াও রয়েছে । 

পল্লী বিদ্যুতের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, নির্মাণাধীন মিটারে প্রতি ইউনিটের বিল ১৫ টাকা ১৫ পয়সা অন্যদিকে শিল্প সংযোগ এর মিটারে ইউনিট প্রতি বিল ১০ টাকা ৭৬ পয়সা।নির্মাণাধীন মিটারের পরিবর্তে শিল্প মিটার অনুমোদন দেওয়ার ফলে ৪ টাকা ৩৯ পয়সা হারাচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী বিদ্যুতের একাধিক কর্মচারীরা জানান, ব্রিজের কাজে সব সময় নির্মাণাধীন মিটার দিতে হয়। নির্মাণাধীন মিটারের জায়গায় শিল্প মিটার দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে ৪ টাকা ৩৯ পয়সা করে লস করা হচ্ছে। ডিজিএম এর নিজের স্বার্থে এই লাইন দেওয়া হয়েছে ।

ব্রিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কংক্রিট এন্ড স্টিল টেকনোলজি লিমিটেডের সুপারভাইজার ইব্রাহিম বলেন, আমাদের রাতে কোনো কাজ হয় না, তবে লাইন তাড়াহুড়া করে দরকার ছিলো। কনস্ট্রাকশন মিটার নিতে গেলে সময় লাগতো। পরে ডিজিএম এর কাছে গেলে উনি এই মিটারের বকেয়া পরিশোধ  করে লাইন নেওয়ার কথা বলেন। পরবর্তীতে আমরা মোট ৫০ হাজার টাকা দিয়ে লাইনটি নিয়ে নেই। 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পল্লী বিদ্যুতের বৈধভাবে লাইন নেওয়ার জন্য সরকারি ফিসের রশিদ দেখাতে বললে, তা দেখাতে পারেনি তারা।

ডিজিএম এর দেখানো তথ্য অনুযায়ী, বৈধভাবে প্রায় ৬৩ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে তারা বৈধভাবে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হরিরামপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সামিউল কবির বলেন, আমি তো অবৈধ কোনো লাইন দেই নাই, অবৈধ কোনো কাজও করি নাই ।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. সুলতান নাছিমুল হক এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বলে, কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরবি/জেডআর

Link copied!