চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি। তিনি হিন্দু না মুসলমান, পুরুষ না মহিলা এই বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পরিস্কার হতে সময় লেগেছে কয়েক বছর। কিন্তু ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে নিজস্ব বাহিনী তৈরী করে সবকিছু চলে যায় তার নিয়ন্ত্রণে। তার এই কাজে ওই সময় সহযোগিতা করেন হাজী নামে ওসমন গণি পাটওয়ারী। এরপর সব কিছু নিয়ন্ত্রণ নেন দীপুর বড় ভাই টিপু।
অবৈধভাবে টাকা আয় করার জন্য তার সঙ্গী হন আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ চিহ্নিত লোকজন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী বালুখেকো সেলিম চেয়ারম্যান। শেখ হাসিনার সাথে এক সময় গনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় চাঁদপুরের জন্য বড় ধরণের উন্নয়ন প্রকল্প আনা হলেও নিজেদের লুটপাট ও ভাগবাটোয়ারায় অমিল হওয়ায় এসব প্রকল্প আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
জেলা সদরে তার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে দলকে একাধিক ভাগে বিভক্ত করেন। বার বার মন্ত্রী হয়েও চরম সমালোচনার মুখে পড়েন দীপু মনি।
২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিগত ১৬ বছরে দীপু মনি নির্বাচন পূর্বে সাধারণ মানুষকে দেয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম চাঁদপুর শহর রক্ষাসহ মেঘনা নদীর বাঁধের মেঘা প্রকল্প, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় অনুমোদন হলেও বাস্তবে অস্তিত্ব সংকট।
সরকারি মেঘা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া এবং লুটপাটের রাজ্য নিয়ন্ত্রণের অন্যতম ছিলেন দীপু মনির আপন বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু। তিনবার মন্ত্রী ও এমপি থাকাকালীন সময়ে তদ্বির, বদলি, ঘুষ বাণিজ্য ও বালু উত্তোলনের টাকার ভাগ নেয়াসহ সব দায়িত্ব পালন করতেন এই টিপু।
এছাড়াও চাঁদপুরে দীপু মনির একান্ত অনুগত সকল লুটপাট জনপ্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন তার বড় ভাই টিপু, সাবেক মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ব্যাপারী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রোমান, পাকিস্তানি বংশধর সাইদুল ইসলাম বাবু ওরফে বিহারী বাবু। বিহারী বাবুর মাধ্যমে চলছে সরকার উন্নয়ন টাকা লুটপাটের সকল কমিশন উত্তোলনের কাজ। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন বদলি বাণিজ্যসহ শিক্ষকদের হয়রানি করার মুলহোতা ছিলেন পুরাণ বাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।
বিরোধীমত ও দীপু মনির অপকর্মের প্রতিবাদী লোকদের প্রায় দেড়যুগ মামলা-হামলা দিয়ে নির্যাতনের কারণে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীপু মনির অনুসারি এবং লুটপাটে নিয়োজিত সকলেই আত্মগোপনে। তার ভাই টিপু দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আর দীপু মনি চাঁদপুর ও ঢাকার বেশ কয়েকটি মামলায় বর্তমানে কারাগারে।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সেলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, বিগত প্রায় দেড় যুগে দীপু মনি তার লোকদের হাতে বিএনপি-জামায়াতের বহু নেতাকর্মী গায়েবি মামলার আসামী ও ঘর ছাড়া হয়েছেন। তার নিজের দলের লোকজনও রক্ষা পাননি। জুলুম ও নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা তার এ ধরণের কর্মকান্ডের জবাব নিতে অপেক্ষায় আছেন। নিরাপত্তাসহ এসব কারণে দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে উপস্থিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন:
সাবেক এই মন্ত্রীর সবচাইতে বড় টাকার মেশিন ছিল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বালুখেকো সেলিম খান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তার হাত ধরেই উত্থান হয় সেলিম খানের। তিনি মেঘনা হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতেন। আর তার ভাগ পেতেন দীপু মনি। তাই তাকে বারবার ডিও লেটার দিয়ে নির্বিচারে পদ্মা-মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দেন দীপু মনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গণপিটুনিতে নিহত হয় সেলিম খান।
অভিযোগ রয়েছে, সেলিম খানের এই বালুমহাল থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন দীপু মনি ও তার ভাই টিপু। যদিও এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সেলিম চেয়ারম্যানকে ২৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা দিতে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক। অথচ এই অবৈধ বালু উত্তোলনের সমালোচনা করায় ২০২৩ সালে ২৬ সেপ্টেম্ব^র নদীরক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীও পদ হারান।
এ প্রসঙ্গে ড. মনজুর আহমেদ চাঁদপুরে সফরে এসে বলেন, মেঘনায় অবৈধভাবে যারা বালু তুলছে, তাদের সঙ্গে একজন নারী মন্ত্রীর সম্পর্ক আছে বলে আমি মন্তব্য করেছিলাম। আর ওই ঘটনার পরই আমি আমার পদ হারাই।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ:
চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদন হওয়ার পর থেকে এর কার্যক্রম চলছে সরকারি জেনারেল হাসপাতারের একটি ভবনে। মেডিকেল কলেজের প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দেখা দেয়া জটিলতা। জমি অধিগ্রহন থেকে দীপু মনির লোকজন টাকা লুটপাটে ধরা পড়ার আশঙ্কায় বন্ধ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার শহরতলীর নিজ গাছতলা এলাকায় জমি পরিদর্শন করা হয়। শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।
নিজগাছতলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম পাঠান বলেন, দীপু মনি নির্বাচন আসলে উন্নয়নের ওয়াদা করতেন। কিন্তু তার ওয়াদা পালন হয়নি। আমাদের এলাকায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করবেন বললেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সরকার অধিগ্রহন করবে ধারণা করে ৩০ একর জমির মালিক কয়েক বছর জমিগুলোতে ফসল করতে পারেনি। দীপু মনির লোকজন সব কাজ থেকে লাভের আশায় উন্নয়ন কাজগুলো বাধাগ্রস্ত।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাধিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসহ তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ের প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ৬০০ কোটি টাকা লুটপাটেরও অভিযোগ ওঠে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনয়িনের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ দীপু মনি চক্রের বিরুদ্ধে। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জমি অধিগ্রহণে ৩৫৯ কোটি টাকা জালিয়তির পাঁয়তারায় তার ভাই টিপুসহ বাহিনীর সদস্যরা জড়িয়ে পড়ে। এই লুটপাটের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিসের মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠির পর। এ কারণেই ওই সময়ে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েও শহর রক্ষায় স্থায়ী ও শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ভেস্তে যায়। বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয় শহরের খলিশাডুলি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়ীতে অস্থায়ীভাবে চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করা হয় সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনা নদী উপকূলে। ওই এলাকায় জমি দখল নিয়ে চলে দীপু মনির টাকার মেশিন বালুখেকো সেলিম চেয়ারম্যানের নৈরাজ্য। এই বিষয়ে ওই এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দা কালু খাঁন, কাজ গাজী ও হাবিবুর রহমান বলেন, সেলিম চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় করবে বলে আমাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে। আমাদের সম্পত্তি আজও বুঝিয়ে দেয়নি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থাপন হয়নি।
দীপু মনির ভাইয়ের টিপু নগর:
দীপু মনির ক্ষমতাবলে তার বড় ভাই জে আর ওয়াদুদ টিপু হাইমচর উপজেলার ৪ নম্বর নীলকমল ইউনিয়নের বাহের চরে ৪৮ একর সরকারি খাসজমি দখল করে গড়ে তোলেন ‘টিপু নগর’। সেই জমি তিনি নিজ নামে দখলে নিয়ে তৈরি করেন মাছের ঘের, গবাদিপশুর খামার ও সবজি বাগান। যদিও বিষয়টি জানতে পেরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সরকারি ভূমি উদ্ধারে উদ্যোগ নেন। কিন্তু তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে দীপু মনি ওই জেলা প্রশাসককে নেত্রকোনায় বদলি করে দেন।
শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে যত অনিয়ম:
২০১৯ সালে শিক্ষামন্ত্রী হন দীপু মনি। এরপর ২০২১ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমানকে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তার সখ্য থাকায় তিনি মন্ত্রীর হয়ে নেমে পড়েন তদবির বাণিজ্যে। আর তার এ কাজে সহযোগিতা করতেন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। এসব বাণিজ্যের ঘুষের টাকা লেনদেনের রফাদফা করতেন দীপু মনির ভাই টিপু। তিনিই বোনের ক্ষমতাবলে শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত না হয়েও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে ভিসি পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের সব পদায়ন, পদোন্নতি ও বদলি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন।
অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ নিয়োগে ৫০ লাখ ও ভিসি নিয়োগে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিতেন টিপু। একাধিক শিক্ষক বলেন, টিপুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটই নিয়ন্ত্রণ করত সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি।
চাঁদপুর শহরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, টিপু ও রতন মজুমদারের মনমতো না হলেই ওই শিক্ষক হয়ে যেত বিএনপি-জামায়াত। যেমন আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিকুলাম বিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় আমাকে খাগড়াছড়িতে বদলি করা হয়েছিল।
অভিযোগ রয়েছে, দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরেরও নিয়ন্ত্রণ নেন টিপু। তিনি এ দপ্তরের ঠিকাদারদের কমিশন ছাড়া কাজ দিতেন না।
স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ:
চাঁদপুরের একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করে বলেন, নিজের স্বার্থ উদ্ধারে দীপু মনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে করেছেন কয়েক ভাগে বিভক্ত। এ ছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশকে নিয়ে একক রাজত্ব কায়েম করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় প্রথম সারির প্রায় সব নেতাই ছিল তার চক্ষুশূল। তিনি তাদের ছাড়াই অগ্রহণযোগ্য নবীন নেতা ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এতে দীর্ঘদিনের দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মী ছাড়াও পুরো চাঁদপুরবাসীর মাঝে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এরপরও হামলা-মামলার ভয়ে কেউ কখনো মুখ খুলতে পারেননি দীপু মনির বিরুদ্ধে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, একটি সংগঠন ব্যক্তি কিংবা পরিবারতান্ত্রিক হবেÑএটা মোটেও কাম্য নয়। ইতোপূর্বে একজনের কারণে জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনৈক্য ছিল। এটা সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে আমি অতীতেও চাইনি, এখনও চাই না। কারণ, যে কোনো অনৈক্য সংগঠনকে দুর্বল করে দেয়।
এদিকে দীপু মনির প্রায় দেড় যুগের সাম্রাজ্যে ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলকে দমন, নিপীড়ন, হামলা ও মামলা ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে আওয়ামী পেটুয়া বাহিনীর দ্বারা জেলা বিএনপির অফিস এবং সভাপতির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে, যা চাঁদপুরের ইতিহাসে ছিল বিরল। অথচ একক রাজত্ব করা দীপু মনি হত্যা ও ভাঙচুরের মামলায় এখন কারাবন্দি।
আপনার মতামত লিখুন :