পাহাড়ের নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাহাড়ের জুমে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে রাঙামাটিতে কৃষি মেলা ও উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাঙামাটি শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় আশিকা কনভেনশন হলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রোগ্রেসিভের আয়োজনে দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়।
ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন, রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আওয়ালীন খালেক। পরে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা, সিএইচটি উইমেন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের রাঙামাটি উপদেষ্টা সুম্মিতা চাকমা, প্রোগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা ও হেডম্যান শান্তি বিজয় চাকমা সহ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মেলায় মোট ২০ টি স্টলে পাহাড়ের জুমে উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল, বিভিন্ন প্রকার জুমের চাল, সবজি, তিল, আলু, ফল প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি জুমিয়াদের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শন করা হয়। এই মেলার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা পাহাড়ে জুম চাষ, জুমের ফসল, জুমিয়াদের জীবনধারা, তাদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ধারণা পাবে বলে মনে করেন আয়োজকরা।
মেলায় এসে জুমে উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য সম্পর্কে জানতে পেরে উচ্ছাস প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা। অমিয় খীসা নামে একজন বলেন, এখানে জুমে উৎপাদিত বিভিন্ন সবজি বিক্রি ও প্রদর্শনী করা হচ্ছে দেখে ভালো খুব লাগছে। এগুলো সব পাহাড়ের জুমে প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত হওয়া একদম ফ্রেশ সবজি। আমি নিজেও বেশ কয়েকটি সবজি ও জিনিসপত্র কিনে নিয়েছি।
রিয়া চাকমা নামে আরেকজন বলেন, এই সবজিগুলো আমাদের পাহাড়ের জুমে কোন কীটনাশক ঔষধ ছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎপাদন করে থাকি। এগুলো আমরা ঘরোয়াভাবে ও স্থানীয় বাজারে বেচা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারছি।
সিএইচটি উইমেন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সদস্য নুকু চাকমা বলেন, নারীরাও এখন জুম, কৃষিতে অনন্য ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে নারীরা সফলতার মুখ দেখছেন এবং অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন।
এছাড়া প্রোগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা বলেন, পাহাড়ের নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও পাহাড়ের জুমে উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল, সবজি গুলোর পরিচয় হওয়ায় জন্য আমাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনের মাধ্যমে যারা জুমের উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল, সবজি ও বীজ রয়েছে সেগুলোর নাম সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আমাদের তৃণমূল নারীরা এসব জুমে উৎপাদিত ফসল গুলো বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন। এর পাশাপাশি সমাজে নারী উন্নয়নে আমাদের পিছিয়ে পড়া নারীরা এগিয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :