বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম

বান্দরবানে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম

বান্দরবানে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বান্দরবান: বান্দরবানের রুমায় জাল স্বাক্ষর করে বিদ্যালয় মেরামতের বরাদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বাচাঢেউ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাম্যাসিং বিরুদ্ধে। এছাড়াও ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) ও স্থানীয়দের মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বান্দরবানে রুমা উপজেলা ২ নং সদর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের রুমা উপজেলা বাচাঢেউ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্ধ দেয়া হলেও ঠিকঠাক কাজ করেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বরংচ অল্প টাকায় কাজ করে জাল স্বাক্ষর দিয়ে অর্থ উত্তোলন করেছেন। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের সংস্কার জন্য বরাদ্ধে অর্থকে অতিরিক্ত ভ্যাট হিসাবে অজুহাত দেখিয়ে বরাদ্ধ টাকা উত্তোলনের পর বদলি নিয়ে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে যাওয়ার বলে অভিযোগ রয়েছে।

রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তথ্যনুসারে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ক্ষুদ্র সংস্কার প্রকল্পের আওতায় রুমা উপজেলায় ২ লক্ষ টাকা করে-৯ টি বিদ্যালয় ও ১ লক্ষ ৫০ হাজারের-৬ টি মোট ১৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকূলে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আওতায় রুমা সদর ইউনিয়নের বাচারঢেউ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য বরাদ্ধ পায় দুই লক্ষ টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ে কিছুটা সংস্কার দেখা হলেও পুরোপুরি না করে অর্থ উত্তোলনে করে নিয়ে যান এই প্রধান শিক্ষক।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয় মেরামতের জন্য টাকা কত বরাদ্দ এসেছে সেটি জানতে চেয়েছিলেন গ্রামবাসী। কিন্তু ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় মেরামতের জন্য শিক্ষা অফিস থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে জানান দেয়। তাছাড়া উত্তোলন করতে গিয়ে সরকারী ভ্যাট ছাড়াও উপজেলা শিক্ষা অফিসে আট হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন সেই শিক্ষক। এছাড়াও প্রাপ্ত সঠিক বরাদ্দের কথা পাড়ার পড়ুয়া ছেলে মেয়ে ও অভিভাবকদের কাছে গোপন রাখেন প্রধান শিক্ষক। নিজের মনমতন পাড়ায় পুরানো বিদ্যালয়ের ভবন থেকে ইট ভেঙ্গে কংক্রিট ভেঙ্গে বিদ্যালয়ের রেলিংয়ে রং করিয়েছেন। কিন্তু সেই রংয়ের একমাস যেতে না যেতেই সব রং উঠে যাওয়ার পাশাপাশি ভালো করে মেরামতের কোন কাজই হয়নি বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসীরা।

বাচ্চাঢেউ পাড়ার চিংপ্রু মারমা (কারবারী) বলেন, বরাদ্ধ আসলেও ভালো মত করে কাজ করেননি বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক। কাজ করা হলেও বরাদ্ধের পরিমান কাজ না করে জাল স্বাক্ষর দিয়ে টাকা গুলো আত্মসাৎ করে বদলি নিয়েছেন। তাই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)র কাছে অভিযোগ দিতে এসেছেন বলে জানা তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রুমা সদর থেকে বাচাঢেউ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব ১২ কিলোমিটার। বিদ্যাল্যেটি ১৯৮৬ সালে জাতীয়করন হয়। সেই বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছে ৪ জন ও শিক্ষার্থীর রয়েছে ৪১ জন। বিদ্যালয়ে দেখা মেলেনি কোন সংস্কারের চিত্র। বিদ্যালয়ে ছাদে ছিদ্র হয়ে পানি পড়ছে। সামনে রেলিংয়ে লোহার রড ভেঙ্গে গেছে নষ্ট হয়ে গেছে শৌচাগার ও। এছাড়াও বিদ্যালয় ভবনে রঙ কিংবা সংস্কার কথা বলে হলেও দেখা মেলেনি সেসবের চিত্র। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসীরা।

এসএমসি‍‍`র সাবেক সভাপতি মংনিং মারমা বলেন, শিক্ষা অফিসার খরচ কেটে নেয়ার পর অবশিষ্ট ৪০-৫০ হাজার টাকা দিয়ে মেরামতের কাজ করেছেন। তারমধ্যে মিস্ত্রি খরচ গেছে ৩০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মাম্যাসিং মারমা। 

এসএমসি‍‍`র সাবেক সভাপতি মংনিং মারমা আরো বলেন, বস্তা সিমেন্ট এনেছেন প্রধান শিক্ষক, স্কুল থেকে ভাঙ্গিয়ে ইট তুলে কংক্রিক ভাঙ্গিয়েছেন দুইজন শ্রমিক নিয়ে।  আর সাংগু নদীর পাড় থেকে বালু আমি (এসএমসি সভাপতি) নিজেই তুলে দিয়েছি, কোন খরচ হয়নি। এসএমসি সভাপতি মংনিং মারমা বিদ্যালয় মেরামত বা সংস্কারের টাকা উত্তোলন করতে প্রধান শিক্ষক তার কোন স্বাক্ষর  স্বাক্ষর না নিয়ে নিয়ম বহিঃভূত ভাবে কিভাবে টাকা উত্তোলন করেছেন এবং বিল ভাউচার সমন্বয় করেছেন তা নিয়ে তিনি বিস্মিত, কারণ তিনি তখন সভাপতির দায়িত্বে বহাল ছিলেন।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ে নামে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দের কথা জানার পর অনেকে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক স্কুল মেরামত নিয়ে ব্যয়ের হিসাব করেছেন । তাদের হিসাব মতে মোট বরাদ্দ ২ লাখ টাকা, এর মধ্যে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা সব মিলে খরচ হয়েছে, বাদ বাকি প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করে বদলি হয়ে গেছে।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাম্যাসিং মারমা জানান, বিদ্যলয়ের সব কাজ করা হয়েছে। প্রয়োজনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান এর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে জাল স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলনের কথা এড়িয়ে যান প্রধান শিক্ষক।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান বলেন এ ধরণের কোনো অভিযোগ তার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, এসব অভিযোগ উপজেলা কাছে দেয়ার কথা। তবে বিভিন্ন বিষয়ে তদন্তের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যেহেতু গণমাধ্যম জানিয়েছেন সেসব বিরুদ্ধে তদন্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জানান তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!