স্বল্প মেয়াদি আগাম আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্নের ফসল আগাম আলু রোপণে জোরেশোরে মাঠে কাজ করছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আলু চাষিরা। আগাম জাতের হাইব্রিড চায়না ধান ঘরে তোলার পর ওই জমিতে আগাম আলু বীজ রোপণ করছেন কৃষকরা। ধানের বাম্পার ফলন দাম পাওয়ার পর দিগুণ লাভের আশায় আলু রোপণ করছেন ওই জমিতে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানান, গতবার এ উপজেলায় ৬ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় ১৮০ হেক্টর বেশি। মৌসুমির শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা অনুযায়ী বাজারে চড়া মূল্য থাকে লাভ হয় দিগুণ। আলু রোপণ হতে উত্তোলন করা পর্যন্ত ৫৫ দিন হতে ৬০ দিন সময় লাগে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভাগ্য সুপ্রসন্ন আর্শীবাদপুষ্ট আগাম রোপণে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে চাষিরা।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কৃষক লুৎফর রহমান লুতু জানান, আমি এবছর ৫০/৬০ বিঘা জমিতে আগাম ও বীজ আলু বপন করবো। ১৩ বিঘা আগাম আলু বপন করেছি।
পুটিমারি ইউনিয়নের কালিকাপুর চৌধুরীপাড়া গ্রামের কৃষক ফজলে রাব্বি চৌধুরী টিপু জানান, ২০ /২২ বিঘা জমিতে আলু গারমো, আশ্বিনা বৃষ্টি হয় দেখি নমলা (দেরি) গারিছি। একই এলাকার খবিরুল ২২ বিঘা, আতাউর ১৬ বিঘা আলু বপন চলমান।
বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরা কুটি গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন জানান, গত বছর ২২ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করে উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে ৬ লাখ টাকা লাভ করেছি,তাই এবছর দ্বিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করছি।
রণচণ্ডী ইউনিয়নের আলু চাষি আব্দুল হাই জানান, গত বছর জমিতে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বিঘায় ৪০/৫০ হাজার টাকা লাভ করেছি। এ বছর ৬ বিঘা জমিতে আগাম আলু করছি।
সদর ইউনিয়নের কৃষক সুকুমার রায় জানান, এবছর আলুর বীজের দাম চড়া, ৬৫ হতে ৭০ টাকা কেজি রাসায়নিক সার, কীটনাশক হালচাষ ও শ্রমিকের দাম বেশি, তাও লাভের আশায় আবাদ করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, এ বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আলু ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে ১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন আশা করা হচ্ছে। এ উপজেলায় ৪শ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে এ অঞ্চলে।
আপনার মতামত লিখুন :