ঢাকা বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪
অর্ধকোটি টাকার ফসল বিক্রির সম্ভাবনা

বগুড়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম

বগুড়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

ফাইল ছবি

বগুড়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষকরা। অল্প সময়ে কম খরচে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, শিম, মুলা, পালং শাকসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় কঠোর পরিশ্রম করছেন তারা।

মৌসুমের তুলনায় আগাম সবজিতে দাম বেশি হওয়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার আগাম সবজি বিক্রি করবেন বগুড়ার কৃষকরা।

বগুড়ার কৃষি বিভাগ বলছে, আগাম জাতের সবজি চাষ করে জেলার কৃষকরা সফল হচ্ছেন। তাই শীত শুরুর আগেই ৮২ লাখ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় বগুড়ায় এবার ১০০ হেক্টর জমিতে বেশি শীতকালীন আগাম সবজি উৎপাদন হচ্ছে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি সবজিক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন। আবার কেউ ক্ষেত থেকে সবজি তুলে বিক্রির জন্য বাজারে নিচ্ছেন। অনেকে নতুন করে শীতকালীন সবজির চারা রোপণেও ব্যস্ত।

গত একসপ্তাহে সদর, শাজাহানপুর, গাবতলী ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, গাজর, বেগুন মুলাসহ হরেক রকম সবজি।

বগুড়ার শাজাহানপুর এলাকার কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় স্বল্প সময়ে শীতকালীন সবজির আগাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। প্রতি বিঘায় সবজি উৎপাদনে যে খরচ, মাঠ থেকেই তা প্রায় দ্বিগুণ দামেই বিক্রি হয়। আর স্বল্প সময়েই বাজারজাত করা যায় বলে এসব সবজি চাষে ঝুঁকেছেন তারা।

সদর উপজেলার রবিবাড়িয়া, শাখারিয়া, তেতুলগুচি এলাকার সবজিরা বলেন, তিনি সারা বছরই বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করে থাকেন। শীতকালীন আগাম জাতের মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মুলা, পালং শাক ও ধনেপাতার আবাদ করা হয়। বাজারে প্রতিটি সবজিরই ব্যাপক চাহিদার সাথে দামও ভালো পাওয়া যায়। বিক্রির জন্য এখন আর বাজারে যেতে হয় না। ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই সবজি কিনে নিয়ে যায় তাই লাভও তুলানামূলক বেশি হয়।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি খরিপ-২ বা আগাম শীতকালীন সবজি চাষের জন্য বগুড়ায় ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি। এই পরিমাণ জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮২ লাখ ১৫৬ মেট্রিক টন সবজি। প্রতি কেজির দাম ৫০ টাকা ধরলে এই পরিমাণ সবজির বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এসব সবজির কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ৩২-৩৩ টাকা।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বলেন, খরিপ-২ বা আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে বগুড়ায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বেগুন, এই ফসলের জমির পরিমাণ। এছাড়াও ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমাটো, মুলা, পালংশাক চাষ হচ্ছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে। আগাম জাতের সবজি চাষে দেশ একদিকে যেমন সবজিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা। তাই এর উৎপাদন আরও বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

আরবি/ এইচএম

Link copied!