শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম

সাতক্ষীরায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম

সাতক্ষীরায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সাতক্ষীরা সরিষা ফুলের গন্ধে মুখরিত ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো প্রতিটি মাঠ জুড়ে কেবল চোখে পড়েছে সরিয়ার হলুদ ফুলের সমারোহ। ফসলের মাঠ এখন রং বে রংয়ের প্রজাপতি ও মৌমাছির গুনগুন শব্দে আকৃষ্ট করেছে সবাইকে। বিকাল হলে গ্রাম এবং শহরের ছেলে মেয়েরা সরিষা ক্ষেতে জমির আইলের উপর দিয়ে পায়ে হেটে ঘুরে ঘুরে এ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন এবং প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে ছবি তুলছেন। শীতের শীতল বাতাসে মাঠগুলো ছেয়ে গেছে সরিষার হলুদ ফুলে। কৃষকের স্বপ্ন দুলছে সরিষার মৌ মৌ গন্ধে। বিভিন্ন মাঠে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ আর বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে চোখে পড়বে হলুদ আর হলুদ রংয়ের সমারোহ। মৌমাছির আনাগোনা আর সরিষা ফুলের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য যেন প্রাণ জুড়ে যায়। ভোজ্য তেলের মূল্য ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুকে পড়েছেন। এ ফসলে সেচ ও সার কম লাগে ফলে সরিষা চাষে খরচ কম ও লাভ বেশী হয়। এছাড়াও ফুল ও পাতা ঝরে জৈব সার তৈরী করে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। তাই অনেক কৃষক সরিষা চাষে ঝুকে পড়েছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, জমিতে দু একটি চাষ দিয়েই বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা যায়। সরিষা আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক কম লাগে এবং কম খরচে সরিষা উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠগুলোতে সরিষার ফুল ফুটেছে। সরিষা কেটে অনেক কৃষক বোরো ধান চাষ করবেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার ভাল ফলন হবে।

সরেজমিন তালা উপজেলায় খানপুর, ভাইড়া, শ্রীমন্ত কাটি, ঘোনা, মাঝিয়ারা, নারায়ণপুর। কলারোয়া উপজেলা গয়ড়া ও চন্দনপুর সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় সুলতানপুর ও শিমুলবাড়িয়া গ্রামে, বিস্তীর্ণ মাঠগুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটা মাঠে কৃষকেরা সরিষার চাষাবাদ করেছেন। ফুলে ফুলে ভরে গেছে মাঠ, কৃষকের মনে বইছে আনন্দের জোয়ার। তালা উপজেলার ঘোনা গ্রামের আব্দুর রহমান ও সদর উপজেলা শফিকুল ইসলাম সরিষা লাগিয়েছেন এবং তারা সাফল্য অর্জনের আশা করছেন। কৃষি বিভাগের প্রনোদনায় গত বছর এবার আবাদযোগ্য জমিতে সরিষা চাষ করে প্রতি মৌসুমে অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় অতিরিক্ত লাভ হবে আশা করছেন। জমিতে প্রণোদনার বীজ পেয়ে আবার অনেকে বাজার থেকে বীজ ক্রয় করে সরিষা চাষ করেছেন তারা।

সরিষা চাষি ভাইড়া গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগের সরকারী প্রণোদনার ভালো বীজ পেয়ে সঠিক সময় বীজ রোপন, সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়, রোগ নিরাময়ের জন্য সঠিক মাত্রায় কীটনাশকসহ ফুলফল বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ও বিভিন্ন প্রকার সার প্রয়োগ করতে হবে তাহলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে, তারা আরও বলেন, ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে বর্তমানে খরচ হয় দেড় হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি ৫-৬ মন সরিষা পাওয়া যায়। প্রতিমন সরিষার বাজার মূল্য ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। অন্যান্য ফসল চাষ করে প্রতি বিঘায় যে পরিমাণ লাভ হয় তার চেয়ে ওই পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করে দ্বিগুণ লাভ পাওয়া যায়।

এছাড়াও সরিষা চাষ করলে ফুল ও পাতা ঝরে জৈব সার তৈরী হয়ে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। সে কারনে জমিতে পরবর্তীতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন কম হয় এবং ধানের ফলন ও ভালো হয়। সরিষা চাষে একদিকে যেমন বেশী লাভ হয় অন্যদিকে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেদিক বিবেচনা করে সাধারণ কৃষকরাও সরিষা চাষের দিকে ঝুকে পড়েছেন।

কৃষকরা আরো জানান, কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে কৃষি বিভাগ থেকে অনেকে সরিষা চাষের জন্য সার ও বীজ বিনামূল্যে সহায়তা পেয়েছেন।

জমিতে বীজ বপন করে সরিষা ভালো হয়েছে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষাবাদে খরচ কম। উৎপাদন ভালো হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সরকারী সার্বিক সহযোগীতায় এবার সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম দৈনিক রূপালি বাংলাদেশের প্রতিনিধিকে বলেন, সাতক্ষীরা একটি কৃষি সমৃদ্ধ জেলা, এই জেলায় বিভিন্ন ফসল চাষ হয়ে থাকে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় এবার সরিষার আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার সরিষার আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫ শত ৩১ হেক্টর জমি। সরিষা চাষে কৃষকদের এ বছর ৫০০০ জনকে সরিষা বীজ এবং সার প্রণোদনা দেওয়াতে বিগত বছরের চেয়ে এবারে অনেক বেশী জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এ জাতের সরিষার ফলন বেশী এবং জীবনকাল কম। সরিষা কেটে কৃষকরা বোরো ধানও উৎপাদন করতে পারবেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!