ময়মনসিংহে খন্ডকালীন সময়ে সরিষা চাষে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। আমন ধান ঘরে তুলেই বোরো সফলের আবাদের আগে খন্ডকালীন সময়ে এই ফসল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় খুশি তারা। সরকার কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সল্প মেয়াদী এই সময়ে চাষিদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করলে কৃষকদের উৎপাদিত সরিষার মাধ্যমেই দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করে দেশের বাহিরেও রপ্তানী করা সম্ভব বলে মনে করছেন সচতেন মহল। সরেজমিন জেলার ভালুকার মল্লিকবাড়ী, ডাকাতিয়া, কাচিনা, উথুরা, মেদুয়ারী, বিরুনিয়া, ধীতপুর ও ভরডোবা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের রোপা আমন ধান ঘরে তোলার পর বোরো ফসলের প্রস্তুতির মাঝ খানে পতিত জমি গুলোতে এখন সরিষার ফুলে ফুলে দুল খাচ্ছে কৃষকদের স্বপ্ন। বাহারী হলুদ প্রান্তরে যে মৌমাছির কোলাহল আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমির প্রতিচ্ছবি তা নয়। এ যেনো কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের আর্শিবাদ। অল্প দিনে উদ্ধৃত্ত ফসল হিসেবে সরিষার বাম্পার ফলন দেখা দেওয়ায় অর্থনীতিক ভাবে লাভবানের পাশাপাশি সরিষা থেকে উৎপাদিত ভোজ্য তেলের স্থানীয় চাহিদা পূরণা ও দেশের অন্যত্র সরবরাহ করে ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা কমানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের পালগাঁওয়ের কৃষক আব্দুল করিম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এক সময় রোপা আমন ফসলের পর বোরো ফসলের জন্য প্রায় ৩ মাস আমাদের যে জমি গুল্যে পতিত থাকতো ওই জমি গুলোতে আমরা এখন আমন ধান ঘরে তুলার সাথে সাথেই সরিযা আবাদ করে কাঠ্য প্রতি ১ থেকে দেড় মন ফলন পাচ্ছি। যার বাজার মূল্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ন্যায় এ বছরো তিনি ৮ কাঠা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তিনি তার পরিবারের বছরের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করেও বাজারে বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকা আয় হবে।
ডাকাতিয়া ইউনিয়নের কাতলামারী গ্রামের কৃষক মামুন (৪০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, তারা ১০ জন বন্ধু মিলে উপজেলার কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৩ একরের ও বেশী জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন এরই মধ্যে ভালো ফলন হয়েছে। এতে তাদের সারা বছরের তেলের চাহিদা মিটিয়েও অন্যত্র বিক্রি করা সম্ভব।
উপজেলার মল্লিকবাড়ীর মোড়ে সরিষা থেকে তেল ভাঙ্গানো দোকান মালিক বাদল (৪৫) জানান,ভালুকার প্রত্যন্ত এলাকায় সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় সবাই সরিষা চাষ করে তারা তেল ভাঙ্গিয়ে সারা বছরে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করছে, আগে অনেকেই বাজারের আমদানি মুখি তেলের উপর নির্ভরশীল ছিল এখন নিজেদের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি অনেকেই সরিষা বিক্রি করে দেয় সেই সরিষা কিনে তা ভাঙ্গিয়ে তেল বিক্রি করেও সে ভাল লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরো জানান সরিষা থেকে ভাঙ্গান্যে তেল ভেজাল মুক্ত হওয়ায় এই এলাকার খাঁটি সরিষা তেলের কদর বাড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
ভালুকা উপজেলা কৃষি অফিসার নুসরাত জামান জানান, ভালুকা উপজেলায় মোট ৮৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে এবং ফলনও ভাল হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমান দাম পেয়ে চাষিরাও খুশি।
আপনার মতামত লিখুন :