ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫

ফসলি জমিতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব, কৃষকদের কপালে ভাঁজ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম

ফসলি জমিতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব, কৃষকদের কপালে ভাঁজ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কাটার ধুম পড়েছে। অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা ফসলি জমির মাটি কেটে ইটের ভাটায় বিক্রি করছে। প্রকাশ্যে এ মাটি কাটার চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় স্থানীয় কৃষকদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নিয়ামতপুর বুশাকান্দা একটি ফসলি মাঠে ফসল উঠিয়ে অবৈধভাবে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সেই মাটি ১৫-২০ ট্রাক্ট দিয়ে মাটি পাঠানো হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়। এতে করে জমির শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ডোবা ও পুকুর। এছাড়া ফসিল জমির টপ সেয়েল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, জমি না দিয়ে কোনো লাভ নেই। আশপাশের মাটি কেটে ফেলা হচ্ছে। আমাদের জমি মনিই নষ্ট হয়ে যাবে। কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে আমার ফসিল জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হবে। জমির পাশে যদি ভেকু দিয়ে ৮-১০ ফুট কেটে নেয়। পাশের জমি এমনই ভেঙে যাবে। আগামী পাঁচ বছর পরে এই মাঠে চাষের কোনো জমি থাকবে না। প্রতিদিন যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ইটভাটার ট্রাক্ট রাস্তা দিয়ে চলাচল করার কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। দশ বছর রাস্তার টেকসই থাকলে এখন তা দুই বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার ফলে একদিকে যেমন কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে, অন্যদিকে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়। এজন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমি ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।

করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ইতোমধ্যে এই বিষয়ে কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক অথবা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি লাগে। যারা ফসলি জমির মাটি কেটে শ্রেণী পরিবর্তন ও ইটভাটায় বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!