ঢাকা সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা, দুর্ভোগ চরমে

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম

তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা, দুর্ভোগ চরমে

ছবি: সংগৃহীত

টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার পরিবার।

শুধু তিস্তাই নয় পানি বেড়েছে লালমনিরহাট এবং এর আশপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সবকটি নদীতে। এতে তলিয়ে গেছে বিস্তির্ণ ফসলের ক্ষেত।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিন্দুর্ণা, সানিয়াজান, পাটিকাপাড়া, আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন, বারঘড়িয়া, সদর উপজেলা কালমাটি, হরিনচড়া, গোকুণ্ডা, কালীগঞ্জ উপজেলার রুদ্রেশ্বর, ইশোরকোল, চর বৈরাতী, মুন্সির বাজারসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে।

এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। এছাড়া নদীর চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে হাজার হাজার হেক্টর রুপা, আমন ধান ও আগাম শীতকালী সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ৪-৫ দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ করে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় তারা গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। সেই সাথে কিছু কিছু এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে পরিবারগুলো, সেই সাথে রান্না করা খারারের সংকট দেখা দিয়েছে।

কালীগঞ্জের মুন্সির বাজার এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গবাদি পশুর খাবার (গোখাদ্য) সংগ্রহ করতেও বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। তারা কোন ত্রাণ সহযোগীতা চায় না, তারা চায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।  তিস্তার দু’পাড়ের মানুষের স্থায়ী সমাধান।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ বিপদসীমার মাত্র ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার কারনে অল্প পানিতেই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পনি কমতে শুরু হলে নদী ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। ভাঙ্গন শুরু হলে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধে করা হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, আমরা বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। জেলার প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত পরিবারের মাঝে ২০ টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 

আরবি/ এইচএম

Link copied!