ঢাকা শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫
রূপালী বাংলাদেশে দুর্নীতির সংবাদ

সাবেক সেই কলেজ অধ্যক্ষ নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম

সাবেক সেই কলেজ অধ্যক্ষ নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ার মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রি কলেজের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা আলোচিত সাবেক অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদকে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, বিস্ফোরণ, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় ছয়টি মামলা রয়েছে।

‍‍`পদত্যাগের আগেই কলেজের দেড় কোটি টাকা উধাও‍‍` শীর্ষক প্রতিবেদন গত ১২ অক্টোবর প্রকাশের মাধ্যমে ওই অধ্যক্ষের মুখোশ উন্মোচন করেছিল রূপালী বাংলাদেশ। তদন্তে দুর্নীতির সত্যতাও পেয়েছিল অডিট উপ-কমিটি। এরপর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন অধ্যক্ষ।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে মামুনুর রশিদকে (৫৩) গ্রেপ্তারের পর বগুড়ার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট পূর্বপাড়ার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।

বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তয়ন কুমার মন্ডল জানান, টঙ্গী পশ্চিম থানার সহায়তায় অভিযান চালিয়ে সাবেক অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাশকতা, প্রতারণাসহ বগুড়ায় একটি ও জয়পুরহাটে পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি টঙ্গীতে আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সূত্রমতে, মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগে বগুড়ার আদালতে মামলা রয়েছে। তিনি গোপনে উত্তোলন করা টাকা কথিত ভাউচারে ব্যয় দেখানোসহ আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। মামলা করার পূর্বে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তদন্ত করে কলেজের গভর্নিং বডি ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে অডিট উপ-কমিটি। সাবেক অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদের দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের কয়েকদিন পর অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুনুর রশিদ। এর আগে তিনি ২০২২ সালে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেছিলেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়, মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে মামুনুর রশিদ দায়িত্বে থাকাকালে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কলেজের কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার ৬৮১ টাকা সরিয়েছেন। গোপনে উত্তোলন করা টাকার বিভিন্ন ভাউচার তৈরি করেন। সেখানে ১ কোটি ১৬ লাখ ২৭৫ টাকা ব্যয় দেখান এবং ২৭ লাখ ১ হাজার ৪০ টাকা নিজে আত্মসাৎ করেন।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান জানান, নিয়ম অনুযায়ী কলেজের সকল আয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হয়। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ নিয়ম তোয়াক্বা করেননি। অনার্স প্রথম বর্ষের ২৩ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি কি বাবদ ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, তৃতীয় বর্ষের ৪০ জন শিক্ষার্থীর ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কোর্সের শিক্ষার্থীদের ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮০ টাকা, ৬৫৪ জন শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড সোল্ডার ব্যাচ বানানোর জন্য ১ লাখ ১ হাজার ৪০ টাকা এবং ভর্তি বাতিলকৃত কয়েকজন শিক্ষার্থীর ৮০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করেন।

আরবি/এইচএম

Link copied!