ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫
৭ জানুয়ারি ২০২৪

কলঙ্কিত অধ্যায় ‘ডামি নির্বাচন’

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১০:৩৩ এএম

কলঙ্কিত অধ্যায় ‘ডামি নির্বাচন’

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। এর পেছনে ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা দেশ-বিদেশে বিতর্কিত ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

বাংলাদেশে ‘একতরফা নির্বাচন’-এর শুরু ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, যেখানে ১৫৪টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীরা সংসদে আসেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ২৫৮টি আসনে জয়লাভ করে। এ ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের দ্বাদশ নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে উত্তেজনা এবং শঙ্কা ছিল তুঙ্গে।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূচনা হয়। কাকরাইল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটে। সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হয়।

নির্বাচন কমিশন ১৫ নভেম্বর ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারিতে ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করে। তবে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার আহ্বান জানান। এ সময় বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়।

নির্বাচনে ২৮টি দল অংশ নেয় এবং ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। তবে মূলত এটি আওয়ামী লীগের একক নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থীদের নির্দেশ দেন, প্রতিটি আসনে ডামি প্রার্থী রাখতে। নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় প্রার্থীদের মধ্যেই সংঘর্ষ হয়, যা ভোটারদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে।

৭ জানুয়ারির ভোটগ্রহণে মাত্র ৪১.৮% ভোট পড়ে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ ২২২টি আসনে জয়লাভ করে, জাতীয় পার্টি ১১টি, এবং অন্যান্য দল ৩টি। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করলেও অধিকাংশই ডামি প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।

অবশেষে, ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনার সরকার মাত্র সাত মাস টিকেছিল। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন, আর দলের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

এ দিনটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বৈরতন্ত্রের একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

আরবি/জেআই

Link copied!