ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা জুরে কনকনে হিমেল বাতাস আর ঘণকুয়াশা মোড়ানো আজ সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে, বইছে হিমেল হাওয়া। এমন আবহাওয়ার মধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ৪০০ জন দৌড়বিদ জড়ো হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ মাঠে প্রাঙ্গনে । সেখানে তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি ছিলেন শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাসে ও আনন্দে সবাই সমানে সমান। তাঁদের কেউ কলেজের শ্রেণিকক্ষে তাঁবু গেড়ে রাত্রিবাস করেছেন। কেউবা আশপাশের হোটেল বা আত্বীয় স্বজনের বাড়িতে আগের রাতেই এসে উঠেছিলেন।
আজ (৩ জানুয়ারি) শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)।
আয়োজক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার। সকাল ৬টা ২০ মিনিটে থেকে ২১ কিলোমিটারে অংশগ্রহণকারী দলটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। পর্যায়ক্রমে রওনা দেয় ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দলটি এবং সর্বশেষ শিশুদের ২ কিলোমিটারের দলটি সোয়া ৭টায় রওনা দেয়। ২১ কিলোমিটারে অংশ নিয়েছেন ১২০ জন। ১০ কিলোমিটারে ২০০ জন, ৫ কিলোমিটারে ৬০ জন ও ২ কিলোমিটারে ২০ জন শিশু। এর মধ্যে ৩৫০ জন পুরুষ, ৩০ জন নারী ও ২০ জন শিশু অংশগ্রহণ করেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী ছিল ৩৬ জন। মাঠ থেকে রওনা দিয়ে জেলার তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া কালীবাড়ি মোড়-সীমনা সড়ক পথে ছড়িয়ে পড়েন দৌড় প্রতিযোগীরা। নির্দেশিত পথে যাঁর যাঁর দূরত্ব অনুযায়ী তাঁরা ছুটে যান গন্তব্যের দিকে।
দৌড় শেষে সীমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের শিমরাইলকান্দি সেতুর দক্ষিণ পাশের একটি জমিতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির উপদেষ্টা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দিলারা আক্তার খান। অংশগ্রহণকারী সবার জন্য একটি করে শুভেচ্ছা স্মারক, সনদ, টি-শার্ট, সকালের নাস্টার পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারীদের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ট্রফি দেওয়া হয়। মোট ৯টি পর্যায়ে ২৭ জনের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি নগদ টাকা দেওয়া হয়। সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্সসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান এই আয়োজনে সহায়তা করে। মেডিকেল সহায়তায় ছিল নোভেল জেনারেল হাসপাতাল। ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই আয়োজনটি সফল করতে কাজ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা তাসমিন মেয়ে পারিসা জুনাইরা চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে এই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে এসেছি। ভালো লাগছে। বর্তমানে শিশুরা মুঠোফোনে আসক্ত। মুঠোফোনের আসক্তি দূরে রাখতে এই দৌড় সহায়তা করবে। আমার মেয়ে অনেক খুশি হয়েছে।
বিআরসির প্রধান উদ্যোক্তা প্রভাষক রাজন মিয়া ও অলি আহাদ বলেন, ‘নিজেদের সুবিধামতো জায়গায় সংগঠনের সদস্যরা প্রতিদিন দৌড়ান। আমাদের একটাই লক্ষ্য। আমরা দৌড়াব, সুস্থ থাকব। আমরা স্মার্ট নাগরিক, রোগমুক্ত ও সচেতন জাতি গঠন করতে চাই। এই উদ্দেশ্যেই আমরা এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করি।’
আপনার মতামত লিখুন :