চাঁদপুরের আট উপজেলায় ৯১টি ইটভাটার মধ্যে ৪১ ইটভাটাই অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। বিগত বছরগুলোতে এসব অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও সংশ্লিষ্ট পরিবেশ অধিদপ্তর কোন ধরণের কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যার ফলে এবছরও ওইসব ইটভাটা চলছে এবং অবৈধ ইটভাটার সংখ্যাও বাড়ছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে খুব দ্রুতই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও হুমকির সম্মুখিন বেশ কয়েকটি ইটভাটা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশেই রয়েছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার মুন্সিরহাট আই.এইচ.ইসলামিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি এবং বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নে রয়েছে বসতবাড়ী সংলগ্ন ফসলি জমিতে একটি ইটভাটা, চাঁদপুর সদরের মৈশাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশেই। মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সীমানা এলাকায় মতিন মনোয়ারা ইটভাটা। একই উপজেলায় বেলতলি এলাকায় নদীর পাড়ে বসতবাড়ী সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে আলাউদ্দিনের ইটভাটা।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ৯১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে হালনাগাদ ছাড়পত্র রয়েছে মাত্র ৫০টি ইটভাটার। বাকি সব বন্ধ ও অবৈধ। তারপরও বেশ কয়টি ইটভাটা নিয়মনীতি না মেনেই অবৈধভাবে ইট উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোন ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।
গত বছর বেশ কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হলেও পরবর্তীতে আবারও ওই ইটভাটা চালু করে ইট উৎপাদন করেছে। নিয়মনীতি না মেনে গাছের গুড়ি, কাঠসহ নানা জিনিস দিয়ে ইট পোড়ানো হয়।
এদিকে ২০২৪ সালে পরিবেশ বান্ধব ব্লক ইট তৈরিতে উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা দিতে বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। ইটভাটা মালিকরা চাইলে প্যাকেজগুলো গ্রহণ করতে পারবে এমন ঘোষনা দেয়া হয়। সকল বায়ু দূষণকারী ও কৃষিজমির মাটি ক্ষয়কারী ইটভাটা বন্ধ করে আধুনিক পদ্ধতির ব্লক ইটের ব্যবহার পুরোপুরি চালু করতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে ইটভাটা মালিক ও প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পরিবেশ বান্ধব ব্লক ইট তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
জেলা ইট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আবদুর রশিদ বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আমাদের কোন সুপারিশ নেই। যারা অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হান্নান বলেন, কয়লায় সালফারের পরিমাণ মাপার যন্ত্র আমাদের নেই। তাই সেটা যাচাই করা সম্ভব নয়।
চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ৯১ ইটভাটা রেয়েছে তার মধ্যে ৫০ টি বৈধ। বাকি ৪১ টি ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান করা হবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, জেলায় যেসব ইটভাটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং হুমকি, সেগেুলো তালিকা করার জন্য বলা হয়েছে। তালিকা করা হলে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :