ঢাকা শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হানিফ বাংলাদেশ ও কানাডায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম

হানিফ বাংলাদেশ ও কানাডায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি বাংলাদেশ থেকে কানাডা পর্যন্ত গড়ে তুলেছেন সম্পদ।

জানা গেছে, এক যুগ আগেও তাঁর দৃশ্যমান তেমন কোন ব্যবসা ও সম্পদ ছিল না। তবে আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতা থাকার সুযোগে মাহবুবউল আলম হানিফ হয়ে ওঠেন ক্ষমতাধর নেতাদের একজন পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। নিজ জেলা কুষ্টিয়া ছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অন্তত ৪টি জেলায় তার সম্পদ ও ব্যবসা-বানিজ্যে আছে বলে জানা গেছে। সামান্য নেতা থেকে হানিফ গত দেড় যুগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পদ পেয়ে আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে যান। এ পদকে পুঁজি করেই সারাদেশে তার জাল ফেলে তৈরি করেন বড় নেটওয়ার্ক। বাগিয়ে নিয়েছেন নানা ব্যবসা-বানিজ্যে। গড়ে তোলেন বিশাল সম্রাজ্য। রাজকীয় ভাবে চলাফেরা করতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন হানিফ। দেশে নানা সম্পদ গড়ার পাশাপাশি কানাডায় হানিফের সম্পদ ও ব্যবসা আছে বলেও জানা গেছে। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গা ঢাকা দিয়ে আছেন হানিফ। তার সম্রাজ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। তার দোসররাও পালিয়ে গেছে। 

হানিফের উত্থান যেভাবে: মাহবুবউল হানিফের বড় ভাই সাবেক সচিব রাশিদুল আলম শেখ পরিবারের জামাই। সেই সুত্র ধরেই হানিফ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন পান হানিফ। তবে পরাজিত হন। এরপর আরো কয়েকবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও বিজয়ী হতে পারেননি। এরপর ২০০৮ সালে মহাজোট গঠনের পর হানিফে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। এরপর দল ক্ষমতায় এলে তাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হয়। ২০১৩ সালের নির্বাচনে সদর আসন থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন হানিফ। কাউন্সিলে পেয়ে যান যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের মত শীর্ষ পদ। এরপর হানিফকে আর পিছে তাকাতে হয়নি। দলের পদ ভাঙ্গিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল সম্রাজ্য। বাড়তে থাকে তার প্রভাব-প্রতিপত্তি। দলে তার অবস্থান আরো পাকাপোক্ত হয় একাধিকবার একই পদ পেয়ে যাওয়ার কারনে। তবে রাজনীতির আড়ালে অর্থ আয় করা ছিল তার নেশা। তিনি দলের নেতাকর্মীদের পাত্তা না দিলেও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে চলতেন। কুষ্টিয়াতেও চলতেন টাকা ওয়ালাদের সাথে। এভাবে গত ১৫ বছরে অগাধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন হানিফ। হানিফের পুরো পরিবার থাকে কানাডায়। সেখানে তার কয়েকজন ভাই ও বোনেরাও বসবসা করে। হানিফের সেখানে গাড়ি-বাড়িসহ সম্পদ আছে বলে জানা গেছে। হানিফের কপাল খুলে যায় শেখ পরিবারের আত্মীয় হওয়ার সুবাধে। দলের শীর্ষ পদ পাওয়ার পরই তার কাছে লোকজনের আনাগোনা বাড়তে থাকে। দলের পদ-পদবি পাওয়ার জন্য অনেকেই ছুটে আসতেন তার কাছে। এছাড়া ঢাকা কেন্দ্রিক নানা কাজের তদবিরও করতেন হানিফ। দলের পদ-পদবি দেওয়ার নামে যেমন অর্থ বানিজ্যে করেছেন তেমনি নানা তদবির, টেন্ডার বানিজ্যে, বড় বড় কাজ বাগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে হাতিয়ে  নিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। হানিফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম কোয়েষ্ট ইন্টারন্যাশনাল। কাওরান বাজারে বিএমটিসি ভবনে তার ব্যবসায়ীক ও রাজনৈতিক অফিস। সেই অফিস ও কুষ্টিয়ার বাসায় বসেই সব কিছু একহাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন হানিফ। 

আরবি/জেডআর

Link copied!