ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

বিদ্যাল‌য়ে অনুপ‌স্থিত থেকেও বেতন-ভাতা তুলছেন প্রধান শিক্ষক

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

বিদ্যাল‌য়ে অনুপ‌স্থিত থেকেও বেতন-ভাতা তুলছেন প্রধান শিক্ষক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের মাঠবাড়িয়ায় মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আ’লীগ নেতা আললমগীর হোসেন খান ৫ মাস ধরে পালিয়ে থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আলমগীর হোসেন খান চরম দুর্ণীতি, দলীয়করণ ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রোষানলে পালিয়ে যান। ওই প্রতিষ্ঠাপনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (সহকারী প্রধান শিক্ষক) মো. এনামুল হক মৃধা পলাতক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন খানের বেতন-ভাতার সুযোগ করে দেয়ায় অভিভাবক ও এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আলমগীর হোসেন খান উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, আলমগীর হোসেন খান ২০১০ সালে ক্ষমতাসীন আ’লীগের প্রভাব খাটিয়ে মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করে প্রতিষ্ঠানটিকে দলীয়করন, দুর্ণীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিনত করেন। তার ১৩ বছরের চাকরীকালে নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষার্থীদের দেয়া বেতন, পরিক্ষার ফি, টিউশন ফি, মোবাইল ফোনের টাওয়ার ভাড়া, ২৯টি দোকান ভাড়া এবং মোটা অংকের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন বসবাসকারীদের প্রতিষ্ঠানের জমি ছেড়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রযেছে।

বিজ্ঞনাগার, শহীদ মিনার, পুকুর খনন ও আইসিটি ল্যাবসহ বিভিন্ন খাতে লাখ-লাখ টাকা বরাদ্দ এনে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিকে তিনি অলিখিত আ.লীগ অফিস হিসেবে ব্যবহার করতেন। ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীসহ লাঠি সোটা নিয়ে মিরুখালী বাজারে বিরোধী দল দমনে মহরা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

আলমগীর হোসেন খানের দুর্ণীতি ও অনিয়মের তদন্ত চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদনকারী গোলাম কিবরিয়া বাচ্চু জানান, তাদের আবেদনের পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর ২ মাস কেটে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।ফ্যাসিবাদের দোসর আলমগীর হোসেন খানকে পূনর্বাসনের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এনামুল হক মৃধা তাকে বেতন ভাতা দিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি, সাবেক মিরুখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান খোকন জানান, ফ্যাসিবাদের দোসর আলমগীর হোসেন খান এবং তার দোসররা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাকে আবার পূনর্বাসন করা হলে তারা মেনে নেবে না বলে তিনি জানান। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আললমগীর হোসেন এর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক মৃধা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কারো অনুপস্থিতিতে ৪ মাস পর্যন্ত বেতন দেয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এতোদিন বেতন ভাতা করেন। এখানে তার কোন হাত নেই। বই বিতরণের সময় সেশন চার্জ ছাড়া আর কোন টাকা নেয়া হয়না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম জানান, অনুপস্থিত অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তদন্ত করে রিপোর্ট শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বেতন বন্ধ করা না করা অধিদপ্তরের ওপর নির্ভর করে।

আরবি/জেডআর

Link copied!