সাতক্ষীরার সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকায় অসহায় ও বিধবা নারীরা সংসারের অভাব ঘোচানো ও সন্তানের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপকূলবর্তী নদীগুলোতে বাগদা রেনু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
জানা যায়, সুন্দরবনের উপকূলীয় নদীর কুমির ও বিষাক্ত সাপের ভয় না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের এবং সন্তানের মুখে দু মুঠো ভাত এর জোগাড় ও সংসারে অভাব ঘোছানোর জন্য উপকূলীয় মাদার নদী, খোলপেটুয়া নদী, কবোতক্ষ নদী, মালঞ্চ নদী, চুনা নদী ও নাম না জানা অধিকাংশ নদীগুলোতে গরীব অসহায় নারীরা নেটজাল দিয়ে বাগদা রেনু আহরণ করে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ নারীরা বাঘ বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, স্বামী ফেলে যাওয়া ও অসহায় নারী।
খোলপেটুয়া নদীতে বাগদা রেনু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করা গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের কদবানু জানান, তার দুই কন্যা সন্তান হওয়ার পর তার স্বামী তাকে রেখে অন্য একটা বিয়ে করে কোথায় চলে গেছে তার আজও কোন খোঁজ পেলেনি, আজ ৭ বছর নদীতে নেট জাল টেনে বাগদার রেণু ধরে তা বিক্রি করে কোন রকমে বেঁচে আছি। মেয়ে দুইটা নিয়ে বাবার ভিটায় ঠাই পেয়েছি।
চুনা নদীতে নেটজাল টেনে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করা বাঘ বিধবা আমেনা খাতুন জানান, বিগত ১০ বছর পূর্বে তার স্বামী সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়। সেই থেকে নদীতে নেট জাল টেনে ৩টা বাচ্চা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। বর্তমানে একটি ছেলে একটু আয় রোজগার করতে শিখেছে। বর্তমানে দুই বেলা দু মুঠো খেতে পারছি। তবে এখনো নদীতে জালটানা বন্ধ করতে পারেনি।
রমজাননগর ইউনিয়নের দীপ বিশিষ্ট গোলা খালীর পারে বসবাসরত মাধবী রানী জানান, তার স্বামীর একা আয়ে ৫ জনের সংসার চলেনা তাই নদীতে জাল টেনে যে কয় টাকা পাই উহাতে স্বামীর অনেক উপকার আসে।
উল্লেখ্য, সুন্দরবন পশ্চিম জোন সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৪টি স্টেশন বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী ও কোবাদক থেকে সুন্দরবনের মধ্যে বাগদার রেনু আহরণের পারমিট বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে সুন্দরবন উপকূলীয় লোকালয়ে নদীগুলোতে বাগদার রেনু আহরণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :