প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে ঋতুবদলের মহাউৎসব। শরৎ পেরিয়ে এসেছে হেমন্ত, শুরু হয়েছে কার্তিক মাস। এরপর আসবে শীতকাল। কিন্তু সন্ধ্যার পর হিমেল হাওয়া ও ভোরের কুয়াশায় যেনো প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সেই সাথে গ্রামীন জনপদ ও নিম্নাঞ্চল গুলোয় ইতোমধ্যে শীতের ছোঁয়া অনুভব করেছে লালমনিরহাটবাসী। দিনের বেলা কড়া রোদ আর গরম থাকলেও রাত হলেই অনুভূত হচ্ছে শীত। এদিকে ভোর হলেও দেখা যায় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পুরো রাস্তাঘাট।
লালমনিরহাটে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি-বন্যা ও খড়া শেষ হতে না হতেই সময়ের আগেই পরতে শুরু করেছে শীত। গভীর রাতে ও ভোর বেলা বের হলেই দেখা যায় এলাকার রাস্তাগুলো কুয়াশার চাদরে যেনো ঢেকে গেছে। কয়েকদিন আগেও ছিল ভ্যাপসা গরম। আর এখন চলছে প্রকৃতিতে ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ শেষে হেমন্ত এসেছে। এরপর আসবে শীতকাল। বাংলা পঞ্জিকার হিসেবে হেমন্তের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে তবেই আসবে শীতকাল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে হেমন্তের শুরুতেই পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগাম বার্তা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন। ভোরে বের হলেই এক অন্যরকম দৃশ্য চোখে পড়ে। ধান ক্ষেতগুলোতে মাকড়সার বাসায় শিশির কণা আটকে আছে।অপরদিকে কুয়াশার কারণে সড়কের কিছু কিছু যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। লালমনিরহাটে ৫ উপজেলায় গত কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টিতে শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে । তবে আগাম শীতের আগমনে ক্ষতি পোষাতে আবারও নতুন করে শাক-সবজির চাষাবাদ শুরু করছেন জেলার কৃষকরা।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার সবজি চাষি সাহিদুল ইসলাম সোহেল বলেন, তিস্তার তীরবর্তী এলাকা হওয়ায় কিছুদিন আগে টানা বৃষ্টি ও বন্যায় অনেক সবজির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। সেই জমিগুলোতে নতুন করে সবজির চাষ শুরু করেছি।
হাতীবান্ধা এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু তাহের বলেন, দিনে গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মৃদু বাতাস ও ঠান্ডার অনুভূতি হয়। মাঝ রাতে শীতল বাতাস ও ঠান্ডার কারণে ফ্যান বন্ধ করে কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে৷
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইফুল আরেফিন জানান, কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় উঁচু-নিচু জমির সবজি চাষে পানি ও শীতের কারণে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দেখা দিতে পারে। ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ে কর্মীরা চাষিদের কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকছে। তাই কুয়াশার মতো বৃষ্টি পড়ছে। নিম্নচাপ কেটে গেলে শীত আরও বাড়বে। গত কয়েকদিন ধরে এখানে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি থেকে সর্বনিম্ন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শীত আরো বাড়তে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :