শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম

হানি ট্র্যাপে ফেলে মুক্তিপণ আদায়, ৩ নারীসহ গ্রেপ্তার ৫

সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম

হানি ট্র্যাপে ফেলে মুক্তিপণ আদায়, ৩ নারীসহ গ্রেপ্তার ৫

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বহু বিত্তবান ব্যক্তিকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি হানি ট্র্যাপ চক্র।

জানা যায়, সদরপুরে দীর্ঘদিন যাবত এই চক্রটি একাধিক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদের ফেলে নিঃস্ব করেছে। গত ৪ নভেম্বর এই চক্রটির খপ্পরে পরে সদরপুরের এক ব্যক্তি মুজাহিদ মৃধা। পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে সদরপুর থানায় ৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৫ এবং ধারা ৩৪২, ৩৬৪, ৩৮৬ ও ৫০৬।

থানা সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করে মোবাইল ফোনে রং নম্বরে অজ্ঞাতনামা এক মেয়ের সাথে পরিচয় হয় মুজাহিদ মৃধার। তাদের মধ্যে কয়েকদিন মোবাইল ফোনে কথাবার্তা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে অজ্ঞাতনামা মেয়েটি তাকে ফোন দিয়ে বাইশরশি জমিদার বাড়ীতে আসতে বলে। তিনি সরল বিশ্বাসে উক্ত স্থানে যাওয়ার পর তাকে ওই মেয়েটি অটোবাইকে উঠতে বলে। অটোযোগে ঘোরাফেরার এক পর্যায়ে ওই মেয়েটি কৌশলে পূর্ব শৌলডুবী এলাকার সাবেক মেম্বার শেখ ফারুকের বাড়ীতে একটি টিনের ঘরে নিয়ে মুজাহিদকে আটক করে। এর পর ওই চক্রের কয়েকজন ব্যক্তি মুজাহিদকে এলোপাথারী মারপিট করে এবং প্রাণনাশের ভয় দেখায়। পরে তার নিকট থেকে মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে জোর করে ৪টি সাদা নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। বিষয়টি তার চাচা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজনদেরকে নিয়ে রাতের বেলা ফারুক মেম্বারের বাড়ীতে গিয়ে সোহরাব খালাসী নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে এবং মুজাহিদকে উদ্ধার করে। ঐ সময় ওই চক্রের অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পরে সোহরাব খালাসীকে জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজনের নাম ঠিকানা জানা যায়। বিষয়টি সদরপুর থানা পুলিশকে জানালে তারা সোহরাব খালাসীকে গ্রেপ্তার করে।

পরে এ মামলায় এজাহার ভুক্ত আসামী শেখ ফারুক মেম্বারকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তার স্ত্রী রেনু বেগমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন লিমা আক্তার এবং রবিন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে মোট ৪ জনকে ফরিদপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়।

মুক্তিপণের এমন ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি সদরপুর থানায় আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেন সদরপুর সদর ইউনিয়নের মৌসুমী আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী। তিনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ইসাহাক বেপারী দীর্ঘদিন যাবত সদরপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করে আসছেন। গত ২ নভেম্বর তার স্বামী চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা রওনা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে তার তার স্বামী তাকে ফোন দিলে বলে ডাক্তারের সিরিয়াল দেওয়া হলে ডাক্তার দেখিয়ে ঢাকার এক হোটেলে অবস্থান করবেন। এর পর তার স্বামীর ফোনে ফোন করে নাম্বার বন্ধ পাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের কেও। পরে ৩ নভেম্বর সকালে তার স্বামী তার মোবাইল নম্বর থেকে তাদের দোকানের কর্মচারী রনি কে ফোন দিয়ে বলে যে তাকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা জিম্মি করেছে। তাদের দেওয়া ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারে ১০ লাখ টাকা পাঠালে তাকে ছেড়ে দিবে। পরে সেই একাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ পাঠিয়ে ইসাহাককে মুক্ত করা হয়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা উল্লেখিত ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার তদন্ত করে জানতে পারে যে, উক্ত একাউন্টটি ঢেউখালী ইউনিয়নের মৌসুমী নামের এক মেয়ের। পরে মৌসুমির বিরুদ্ধে সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ইসাহাকের স্ত্রী। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে মৌসুমির সন্ধান আর পাওয়া যায়নি। খোঁজাখুজির এক পর্যায় গত ৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) পুলিশের হাতে ধরা পরে মৌসুমি।

মৌসুমিকে ধরার পর জানা যায় হানি ট্র্যাপ চক্রের অন্যতম একজন সদস্য এই মৌসুমি। এই নিয়ে চক্রের মোট ৩ জন নারী ও ২ জন পুরুষ সদস্যকে ধরে জেল হাজতে পাঠালো সদরপুর থানা পুলিশ।

এই চক্রের বিষয়ে এলাকাবাসীরা বলেন, এই চক্রের বাকি সদস্যদের যদি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হয় তবে আরো বহু ব্যক্তি এই চক্রের খপ্পরে পরে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলবেন।

এ ব্যাপারে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এস আই তানভীর বলেন, এখন সোর্সের ভীষণ অভাব। আগের মত কেও সোর্স হয়ে আসামীদের খোঁজখবর দিতে চায় না। তাই বাকি আসামীদের গ্রেফতার করতে একটু সময় লাগছে।

সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল মোতালেব হোসেন বলেন, এই মামলায় ইতিমধ্যে আমরা ৫ জন কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। শীঘ্রই আমরা এই চক্রের সকল সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা চাচ্ছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!