ভোলায় সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাজার ব্যবস্থা। বিশেষ করে মাছের দাম আকাশচুম্বী। নদীবেষ্টিত ভোলায় মাছের দাম অন্য জেলার চেয়েও অনেক বেশি। এ জেলায় শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। ইলিশ মাছের বাড়ি ভোলা হলেও ইলিশ মাছও চওড়া দামে কিনতে হয় ক্রেতাদের। মাছ মাংসসহ প্রায় সব পণ্যই বেশ কয়েকটি হাত বদল হয়ে বেশি দামে কিনছে সাধারণ ভোক্তারা। কিন্তু কোন নজরদারি নেই। মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বাজার পরিস্থিতি ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেছেন মতবিনিময় সভায় উপস্থিত আলোচক ও সাধারণ ভোক্তারা।
সভায় বিশেষ অতিথি সিভিল সার্জন ডা. মুনিরুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি পার্শবর্তী জেলা পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায়। সেখানেও মাছের দাম এতো বেশি নয়। ভোলায় মাছ কিনতে গেলে হিমশিম খেতে হয়। এ জেলায় সব মাছের দাম উর্ধ্বগতি। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। প্রায় একই কথা বললেন, আরেক বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রিপন চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, মাছের দামের সাথে ভোলায় অনেক ওষুধের দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে। সেখানে ওষুধ বা ড্রাগের দেখাশোনা যারা করছেন তাদের নজরদারি নেই বললেই চলে। এ বিষয়ে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় তদারকি জরুরি বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তাতায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোবাশ্বের আলম বলেন, আসলে বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে এবং কিভাবে বাজার চলবে তার আইন-কানুন অনেক আগে থেকেই চলমান রয়েছে। এ আইন কেউ মানেন, আবার কেউ মানেন না। কখনো কখনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও আইন মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু আইন করে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয়। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার জনসচেতনতা। প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ভোলা জেলা শাখার সভাপতি মো. সুলাইমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তিতা করেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভোলার সহকারী পরিচালক নূর হোসেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ভোলা জেলা কার্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য অফিসার সাগর মল্লিক, সিনিয়র সাংবাদিক মোতাসিম বিল্লাহ, শিমুল চৌধুরী, ব-দ্বীপ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মীর মশাররফ হোসেন অমি, নারী নেত্রী বিলকিস জাহান মুনমুন, কবি মহিউদ্দিন, ওষুধ বিক্রয় কর্মকর্তা সুমন বিশ্বাস, চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. ফয়সাল, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মে. নকিব, কাচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, দুধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কয়সর আহমেদ, তৃষ্ণা বেকারীর মো. ফরিদ, পোশাক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, ওষুধ ব্যবসায়ী শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল, আইচক্রিম বিক্রেতা নুরুজ্জামান, মাংস ব্যবসায়ী আমির হোসেন প্রমূখ বক্তৃতা করেন। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। জেলা প্রশাসন ও কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এ সভার আয়োজন করে।
আপনার মতামত লিখুন :