শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০২:৫১ পিএম

স্টেশনে শত শত যাত্রী রিফান্ড করছে টিকিট

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০২:৫১ পিএম

স্টেশনে শত শত যাত্রী রিফান্ড করছে টিকিট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে খুলনাগামী সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য এসেছেন যাত্রী যশোরের মনিরাপুর উপজেলার বাঘদব গ্রামের নবাব আলী। তিনি বলেন, তিন দিন আগে টিকিট সংগ্রহ করেছি। আমি ও আমার মেয়ে গ্রামে যাবো। আজ সকালে স্টেশনে এসে শুনছি কোনো ট্রেন চলাচল করছে না। এখন কীভাবে বাড়ি যাবো বুঝে পাচ্ছি না।

মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার জন্য নাটোরের কয়েনবাজার থেকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসেছেন জান্নাত আরা বেগমসহ পরিবারের পাঁচজন। তারা দুইদিন আগে টিকিট সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু জানতেন না ট্রেন চলাচল বন্ধ। তারা এখন কীভাবে ঢাকায় যাবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে রাতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার ফুলবাড়িয়া থেকে মহানন্দা ট্রেনে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসেছেন আব্দুল রাজ্জাকসহ ২৬ জন। এখান থেকে ভোর ৫টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ঢাকা মেইলে কম খরচে ইজতেমায় যেতে চেয়েছিলেন। এসে তারা শুনছেন ভোরে ট্রেন ছাড়বে না। তবুও তারা ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষায় স্টেশনে বসে আছেন। এখন স্বল্প খরচে কীভাবে ইজতেমায় যাবেন সেটা ভাবছেন। এভাবেই দিব বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে ট্রেন যাত্রীদের ভীড়। তবে এখন পর্যন্ত কোন ট্রেন ছেড়ে যাই নি ঈশ্বরদী জংশন হয়ে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়।

জানা যায়, মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ৩ বছর ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। কয়েক দফায় অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত থাকা এবং ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলপথ সচিব, রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসা হয়। কিন্তু এবার দাবি না মানায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু করেছেন তারা।

সরজমিনে দেখা যায়, স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ও অন্যান্য লাইনে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ১২টি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। কোনো ট্রেনের সঙ্গে ইঞ্জিন নেই। স্টেশনে কর্মরত রানিং স্টাফ টিটিই, গার্ড ও ট্রেন চালক কারো দেখা মেলেনি। বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য শত শত যাত্রী স্টেশনে এসে ঘুরে চলে যাচ্ছেন। স্টেশনের মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে অনিবার্য কারণবশত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কথা। বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের পার্ট অফ পে রানিং এলাউন্স (মাইলেজ) যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত ১২টা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ২৮ জানুয়ারি যাত্রা করার জন্য যারা টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন তারা কাউন্টারে টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন। আর যারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করেছেন তারা অনলাইনের মাধ্যমে রিফান্ড করতে পারবেন।

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সুজন কুমার বলেন, ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এ স্টেশন থেকে তিনটি ট্রেন ছেড়ে যায়। কিন্তু আজ কোনো ট্রেন ছাড়েনি। ঢালারচর এক্সপ্রেস, ঢাকা মেইল, ঈশ্বরদী কমিউটারের সব বগি স্টেশনে রয়েছে। কিন্তু কোনো ইঞ্জিন স্টেশনে আসেনি। এছাড়াও এ স্টেশন হয়ে চলাচলকারী সকাল ৭টা ১০ মিনিটের সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ও ৭টা ৪০ মিনিটে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রস ট্রেন স্টেশনে আসেনি। ভোর থেকে শত শত যাত্রী স্টেশনে এসে ফিরে যাচ্ছেন। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তার নির্দেশে মাইকিং করে ২৮ তারিখে যাত্রীদের টিকিট কাউন্টারে ফেরত দিয়ে টাকা সংগ্রহ ও অনলাইনে যারা টিকিট সংগ্রহ করেছেন তারা অনলাইনের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের বুকিং সহকারী শামীম আহমেদ বলেন, সকাল থেকে মধুমতি, সাগরদাড়ি, ঈশ্বরদী কমিউটার, সিল্কসিটিসহ বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তা বা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার আর কোনো সুযোগ নেই। তারা আমাদের দাবি মেনে নিলেই আমরা কাজে যোগ দেবো। এছাড়া আমাদের এখন আর কিছু করণীয় নেই।

বাংলাদেশ রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, মাইলেজ প্রদানসহ সকল দাবি পূরণের জন্য রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে রেলওয়ে কর্মকর্তা ও রেল মন্ত্রণালয়কে তিন বছর ধরে আমরা চিঠির মাধ্যমে অবহিত করে আসছি। পাশাপাশি আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি এবং আমাদের কোনো ধরনের মূল্যায়ন করেননি। তাই রানিং স্টাফরা বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি দিতে বাধ্য হয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!