ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

কুষ্টিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার বাড়ছেই

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম

কুষ্টিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার বাড়ছেই

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুষ্টিয়ায় ব্যাঙের ছাতারমত গড়ে উঠেছে অশংখ্য লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার। জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনার সুযোগে স্বাস্থ্যসেবা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের চিকিৎসা বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে।

এদিকে, সরকারি তদারকির অভাবে কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলাগুলোর বেসরকারি লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারসহ অর্ধশত প্রতিষ্ঠান রোগীদের দুর্বলতার সুযোগে তাদের জিম্মি করে ইচ্ছামতো অর্থ আদায় করছে। স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার নাম করে জনসাধারণের অর্থ লুটপাট ও প্রতারণা করছে। অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নেই পর্যাপ্ত লোকবল, নেই মেশিনারি, নেই অনুমোদন, তবুও দালাল মারফত প্রতিনিয়ত চলছে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা। কিন্তু এই নিয়ে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা দেখা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনের কথা থাকলেও তা ঠিকমতো নজরদারির আওতায় আসেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকার পরও নিরব ভূমিকায় আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জন অফিস। গত বছর স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনার পর অনেক অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তদারকির অভাবে সেগুলো এখন চলমান। অনেকেই আবার নাম পরিবর্তন করে পূর্ণরায় চালাচ্ছেন সেসব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ব্লাক লিস্ট থেকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে এখনো বহাল তবিয়তে তারা। নিয়মিত রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আছে নিরব ভূমিকায়। এসব ১০ বেডের একটি ক্লিনিকের জন্য তিনজন সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, ছয়জন ডিপ্লোমা নার্স, তিনজন সুইপার থাকার পাশাপাশি তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সম্মতিপত্র থাকলেই তার অনুমোদন মিলবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। তবে অনুমোদনের আগেই এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ক্লিনিক চালু করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শন শেষে রেজিস্ট্রেশন লাভের পরেই সেটি হবে বৈধ ক্লিনিক। আর এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের অধিকাংশ চিকিৎসকই ভুয়া।

সম্প্রতি, কুষ্টিয়া শহরের আগরওয়ালা রোড কোর্টপাড়ার র‌্যাব গলিতে এলাকায় সেভ ডায়াগনষ্টিক এন্ড মেডিক্যাল সার্ভিস নামক একটি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় জারিফ নামে শিশুর মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশু জারিফ চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার দর্লবপুর এলাকার জুয়েল রানার ছেলে।

এছাড়া মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের চিথলিয়া শাহা পাড়া মোড়ে অবস্থিত নিউ সুমি ক্লিনিকে রুপসি খাতুন (২০) নামে একজন প্রসূতি মায়ের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন আকুল উদ্দিন বলেন, কুষ্টিয়ায় লাইসেন্সকৃত ২২১টি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার আছে। তবে এদের বেশির ভাগই নবায়ন নেই। স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে যারা এখনও নবায়ন করেননি বা অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!